ঢেউয়ের আঘাতে ভাঙন বাড়ছে মেরিন ড্রাইভের
* সড়কটির ১৫ স্পটে ভাঙন
প্রকাশ : ০৫ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
এএইচ সেলিম উল্লাহ, কক্সবাজার
সামুদ্রিক জোয়ারের ঢেউয়ের আঘাতে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে গতকাল শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের অন্তত নতুন ৫টি স্পটে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে গত তিন দিনে সড়কটির কমপক্ষে ১৫টি স্পটে ভাঙন ধরেছে। সবচেয়ে বেশি ভাঙনের কবলে পড়েছে মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের বাহারছড়া ঘাট থেকে হাদুরছড়া বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন শ্মশান পর্যন্ত ২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। গতকাল সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ২ ঘণ্টায় ওই এলাকার পশ্চিম মুন্ডার ডেইল সংলগ্ন নতুন করে ভেঙেছে দেড় শত মিটারের বেশি। গত বৃহস্পতিবার ওই এলাকায় ৬০ মিটারের কাছাকাছি সড়ক ভেঙে গিয়েছিল। এই দুই ঘণ্টায় দেখা যায়, জোয়ারের সময় ঢেউয়ের তীব্রতা এসে আঘাত আনছে সড়কে। যেখানে সড়কটি ওই অংশের অর্ধেক ভেঙে গেছে। ওখানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের একটি বিশেষ ইউনিট জিওব্যাগ দিয়ে রক্ষার চেষ্টা করছেন। আশপাশে বাহারছড়া, হাদুরছড়া, দক্ষিণ মুন্ডার ডেইল এলাকায় অন্তত ১৫ স্পটে সৃষ্টি হয়েছে ভাঙন। ওই এলাকায় কয়েকশত ঝাউগাছও উপড়ে গেছে। স্থানীয় কয়েকজন জানিয়েছেন, সড়কের পূর্ব পাশে প্রভাবশালী অনেক ব্যক্তি জমি কিনেছেন। তাদের কেনা জমি ভরাট করতে সড়কের পাশের সৈকত থেকে অবাধে বালু তোলা হচ্ছে। এতে সড়কটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। এছাড়া সড়ক রক্ষায় স্থাপন করা জিওব্যাগগুলোও ফেটে যেতে শুরু করায় ঝুঁকি বেড়েছে। সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. সেলিম বলেন, ভাঙনের কারণে স্থানীয় ২ হাজার পরিবারের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। দ্রুত ঠেকানো না গেলে টেকনাফের সাবরাং টুরিজম পার্ক অর্থনৈতিক অঞ্চলের সঙ্গে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। একই সঙ্গে সড়কের পূর্ব পাশের গ্রামের বসতঘর, জমিসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক ক্ষতি হবে। এখন জোয়ারের ঢেউ সড়কটির অর্ধেক ভেঙে দিয়েছে মন্তব্য করে মো. সেলিম জানান, বড় ভাঙন রোধে সেনাবাহিনী কাজ শুরু করেছে। ছোট্ট ছোট্ট ভাঙন প্রতিরোধে কাজ করা জরুরি। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান বলেন, পূর্ণিমার প্রভাবে জোয়ারের পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে গেছে। এতে মেরিন ড্রাইভের সাবরাং বাহারছড়া ঘাট মুন্ডার ডেইল, হাদুরছড়া ও পশ্চিম মুন্ডার ডেইল এলাকার বিভিন্ন অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন রোধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর কাজ করছে। এদিকে জোয়ারের ঢেউয়ের আঘাতে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ঢেউয়ের আঘাতে উপড়ে যাচ্ছে ঝাউগাছ, তলিয়ে যাচ্ছে জিওব্যাগ, তছনছ হচ্ছে বালিয়াড়ির রাস্তা ও হুমকির মুখে সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা।