ঢাকা ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কক্সবাজারে ছিনতাইকারিদের সঙ্গে গোলাগুলি

পুলিশের সাত সদস্য আহত অস্ত্র ও গুলিসহ গ্রেপ্তার তিন

পুলিশের সাত সদস্য আহত অস্ত্র ও গুলিসহ গ্রেপ্তার তিন

কক্সবাজার সদর উপজেলার দক্ষিণ মুহুরীপাড়ায় ছিনতাইকারিদের সঙ্গে পুলিশের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এসময় আহত হয়েছেন পরিদর্শকসহ পুলিশের সাত সদস্য। অস্ত্র ও গুলিসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে চিহ্নিত তিন ছিনতাইকারি। তাদের মধ্যেও একজন আহত হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার বিকাল ৫টায় কক্সবাজার সদর থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. মিজানুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।

এএসপি জানিয়েছেন, গতকাল ভোরে কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ মুহুরী পাড়ার জনৈক মো. হেফাজত উদ্দিনের বাড়িতে এ অভিযান চালানো হয়। গ্রেপ্তাররা হলো, জসিম উদ্দিন সোহেল ওরফে সোহেল রানা (৩৫), আব্দুর রাজ্জাক ওরফে আজিজ (২৩) ও মোহাম্মদ এহেছান ওরফে লালু (২১)। এতে আহত সোহেল রানাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আহত পুলিশ সদস্যরা হল- পরিদর্শক দুর্জয় বিশ্বাস ও এসএম শাকিল হাসান, এসআই মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, এসআই মাসুম ফরহাদ, এসআই সৈয়দ সফিউল করিম, কনস্টেবল জাহাঙ্গীর আলম ও মো. মেহেদী হাসান। এরা সকলেই কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সংবাদ সম্মেলনে এএসপি মিজানুর বলেন, গত ২ আগস্ট সকালে চট্টগ্রাম টেক্সটাইল ইজ্ঞিনিয়ারিং কলেজের ছাত্র এবং কক্সবাজার শহরের বাসিন্দা শেখ সামির ইসলাম বাড়ি ফিরছিলেন। ওইদিন সকাল ৬টায় কক্সবাজার শহরের কলাতলী মোড় থেকে সে ব্যাটারি চালিত রিকশাযোগে সার্কিট হাউজ সড়কের ম্যাজিস্ট্রেট কলোনির সামনে পৌঁছলে চারজন অজ্ঞাতনামা ছিনতাইকারি গতিরোধ করে। এসময় শেখ সামির ইসলামের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ ও মালামালের ব্যাগ ছিনিয়ে নিতে চাইলে ছিনতাইকারিদের বাঁধা দেয়। এতে ছিনতাইকারিরা উপর্যুপুরি তাকে ১৫ থেকে ১৬টি ছুরিকাঘাত করে সবকিছু ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে তার চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে ছিনতাইকারিরা পালিয়ে যায়। এরপর স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠায়।’

এ ঘটনায় গত বুধবার শেখ সামির ইসলামের মা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা চার ছিনতাইকারির বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন উল্লেখ করে সহকারী পুলিশ সুপার বলেন, ‘গতকাল ভোর রাতে কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ মুহুরী পাড়ার জনৈক মো. হেফাজত উদ্দিনের বাড়িতে ছিনতাই ঘটনায় জড়িত আসামিরা অবস্থান করছে এমন খবরে পুলিশের একটি বিশেষ দল অভিযান চালায়। এতে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্দেহজনক আসামিরা ভবনের দ্বিতীয় তলা থেকে লাফিয়ে পালানোর চেষ্টা করে এবং পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়তে থাকে। এসময় আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি ছুঁড়ে। এক পর্যায়ে পুলিশ ধাওয়া দিয়ে চিহ্নিত ছিনতাইকারি জসিম উদ্দিন ওরফে সোহেল রানাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হলেও অন্যরা পালিয়ে যায়। এসময় গ্রেপ্তারদের দেহ তল্লাশি করে দেশীয় তৈরি একটি বন্দুক এবং তিনটি ছোরা উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার সোহেল রানার হাতে ও পেটে গুলি লেগেছে। ছিনতাইকারির চক্রের গুলিতেই সে আহত হয় বলে দাবি করেছেন এএসপি মিজানুর।

গ্রেপ্তারদের স্বীকারোক্তির বরাতে মিজানুর রহমান বলেন, গ্রেপ্তাররা সংঘবদ্ধ একটি অপরাধী চক্রের সদস্য। আর এই দলটির প্রধান গ্রেপ্তার জসিম উদ্দিন সোহেল ওরফে সোহেল রানা। এসব অপরাধীরা নানা কৌশলে কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন এলাকায় চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি ও অপহরণসহ বিভিন্ন অপরাধ সংঘটনের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। জসিম উদ্দিন ওরফে সোহেল রানার বিরুদ্ধে ছিনতাইসহ নানা অভিযোগে ১০টির বেশি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার অন্যরা ছিনতাইকারি দলের সক্রিয় সদস্য। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট পৃথক আইনে দুইটি মামলা করা হয়েছে বলে জানান এএসপি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত