নানা আয়োজনে বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামালের জন্মদিন পালিত

প্রকাশ : ০৬ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

শ্রদ্ধা নিবেদন, আলোচনা সভা, কবর জিয়ারত, দোয়া, ফাতিহা পাঠ ও পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্যদিয়ে পালিত হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী গতকাল যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয়েছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে শেখ কামালের জন্মদিবসটি পালন করা হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সরকারের সব দপ্তরে যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি পালিত হয়।

গতকাল সকাল সাড়ে ৮টায় বনানী কবরস্থানে শেখ কামালের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানো হয়। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা তার কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। পরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্টে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় মোনাজাত করেন তারা। এর আগে সকালে ধানমন্ডির আবাহনী ক্লাব প্রাঙ্গণে শহীদ শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ সময় দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে যুবলীগ, কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা লীগ, যুব মহিলা লীগ, ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ-সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের পক্ষ থেকে শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর একে একে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শহীদ শেখ কামালের সমাধিতে ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠপুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে তার প্রতিকৃতিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংগঠন শ্রদ্ধা জানিয়েছে। এছাড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল।

প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়: সকালে আবাহনী মাঠে শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। পরে রাজধানীর ফার্মগেটে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সম্মেলনকক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. এমদাদুল হক তালুকদারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ। সভায় বক্তব্য রাখেন, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার মাহবুবুল হক, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের পরিচালক (অর্থ) মো. ফজলুল হক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তরের উপ-পরিচালক ডা. সঞ্জীব সূত্রধর, বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার ডা. গোপাল চন্দ্র বিশ্বাস, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নীলুফা আক্তার। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামালের জীবনী নিয়ে আরো গবেষণা হওয়া প্রয়োজন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কত বড় মানুষ ছিলেন, কত বড় একজন নেতা ছিলেন সেটা আমরা সবাই জানি। জাতির পিতার জ্যেষ্ঠপুত্র শেখ কামাল তার মধ্যে বাবার গুণাবলি ধারণ করেছিলেন। চালচলন ও পোশাক-পরিচ্ছদে শেখ কামাল ছিলেন অতি সাধারণ। বিনয় ছিল তার চরিত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের শ্রদ্ধা: সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদের নেতৃত্বে শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মন্ত্রণালয় ও এর আওতাধীন বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদসহ বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থার প্রধানরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। পরে প্রতিমন্ত্রী রাজধানীর বনানী কবরস্থানে শহীদ শেখ কামালের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের শ্রদ্ধা: সকালে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরীর নেতৃত্বে ধানমন্ডি আবাহনী মাঠে স্থাপিত শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায়। পরে বনানী কবরস্থানে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং অধীন দপ্তর ও সংস্থার প্রধানদের নিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় শহীদ ক্যাপ্টেন কামালের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ফাতেহা পাঠ করা হয়। পরে বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী শেখ কামালের জীবন ও কর্ম নিয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআরটিএ মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী।

সভায় শেখ কামালের বর্ণাঢ্য জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নীলিমা আখতার, শফি উল হক, জাকির হোসেন। এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মইনুল হাসান, ডিএমটিসিএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক, ডিটিসিএ’র নির্বাহী পরিচালক সাবিহা পারভীন, বিআরটিসির চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, বিআরটিসিএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিকুল ইসলাম।

বক্তারা আলোচনায় শেখ কামালের মাত্র ২৬ বছরের জীবনের অর্জন, মহান মুক্তিযুদ্ধে তার অসামান্য অবদানসহ দেশের ক্রীড়াঙ্গন, শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে তার অনবদ্য নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। জাতির পিতার সুযোগ্য পুত্র হিসেবে তারুণ্যের শক্তিকে তিনি দেশগড়ার কাজে লাগিয়েছিলেন। শেখ কামালকে বহুমাত্রিক প্রতিভা হিসেবে আখ্যায়িত করে তার জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। পরে শেখ কামালসহ ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট ইতিহাসের নির্মম হত্যাকাণ্ডে শাহাদত বরণকারী জাতির পিতাসহ বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যরা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহিদদের মাগফেরাত ও দেশ-জাতির মঙ্গল কামনা করে মোনাজাত করা হয়।

ডিএনসিসির শ্রদ্ধা: রাজধানীর বনানী কবরস্থানে শেখ কামালের সমাধিতে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজার নেতৃত্বে কাউন্সিলর ও কর্মকর্তারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করে এ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম শফিকুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এসএম শরিফ-উল ইসলাম, ডিএনসিসির সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক, ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জামাল মোস্তফা, ১৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মফিজুর রহমান, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর হাছিনা বারী চৌধুরী, সাহিদা আক্তার শীলা, আমেনা বেগম, শাহিন আক্তার সাথী, রোকসানা আলম প্রমুখ।