টাঙ্গাইলের সখীপুরে নিজ জমিতে বাণিজ্যিকভাবে আঙুর চাষ করে সফলতা পেয়েছেন কৃষি উদ্যোক্তা জাহিদুল ইসলাম। ইউটিউবে আঙুর চাষ দেখে উদ্বুদ্ধ হন তিনি। পরবর্তীতে ইউটিউব দেখেই পরিকল্পনা করেন বাড়ির আঙিনার পতিত জায়গায় আঙুর চাষ করার। বাড়ির পাশে ২০ শতাংশর জমিতে প্রথমে ৪৯টি আঙুর চারা রোপণ করেন। এরপর থেকেই শুরু করেন আঙুর চাষের পরিচর্চা। প্রথমবারেই আঙুর চাষে বাজিমাত করেন জাহিদুল। এদিকে আঙুর চাষে তার সফলতা দেখে প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকার মানুষ আঙুর বাগান দেখতে ছুটে আসছেন। এমন বাগান করতে আগ্রহী হচ্ছেন নতুন নতুন উদ্যোক্তারা। জাহিদুল ইসলামের বাড়ি উপজেলার দারিয়াপুর গ্রামে। জাহিদুল ঢাকার কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের নায়েক পদে কর্মরত রয়েছেন। সরেজমিন দেখা যায়, ক্ষেতজুড়ে আঙুর বাগান, থোকায় থোকায় ঝুলে আছে কাঁচা-পাকা রসাল আঙুুর। আঙুর ক্ষেতে পরিচর্যা করছেন জাহিদুল ও তার কর্মচারীরা। দর্শনার্থীরা আঙুর দেখতে ভিড় করছেন। জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমি ইউটিউবের মাধ্যমে মিষ্টি আঙুর চাষ করা দেখি এবং আঙুর চাষে ভালো ফলন হয়েছে। পরবর্তীতে আমি ২০২২ সালের রমজানের শুরুতে ২২ হাজার টাকায় ৪৯টি চারা ক্রয় করে বাড়ির পাশে ২০ শতাংশর জমিতে রোপণ করি। এতে ১ বছরের মধ্যে এ বছর রমজানের আগেই ফলন আসতে শুরু করে। প্রতিটি গাছে ২০ থেকে ২৫ কেজি করে আঙুর হয়। এতে প্রথমবারেই আমার ফলন ভালো হয়েছে। প্রতিদিন ৮০ কেজি করে আঙুর বাগান থেকে তুলে থাকি। বিক্রি করছি ২০০ টাকা কেজি দরে। এরই মধ্যে প্রায় দেড় লাখ টাকার আঙুর বিক্রি করা হয়েছে। এ বছরই প্রায় ৩ লাখ টাকার আঙুর বিক্রির আশা করছি। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে আমার বাগানে ৫৭টি আঙুর গাছ রয়েছে। তবে এ বছর লাল, কালো এবং সবুজ রঙের আরো তিনটি নতুন জাতের চারা রোপণ করা হয়েছে। ভেজাল খাবার পরিহার এবং স্বাস্থ্য সম্মত খাবার সাধারণ মানুষকে খাওয়ানোর জন্য এমন উদ্যোগ নিয়েছি। পরিবারের সদস্যরাও এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করেছেন। জাহিদুল ইসলামের আঙুর বাগানটি দেখাশোনা করেন ভাতিজা রাকিব হোসেন। এ ব্যাপারে টাঙ্গাইলের কৃষি সম্প্রসাধারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষন) নুরুল ইসলাম বলেন, জাহিদুল ইসলাম ভারতের চয়ন জাতের আঙুর চাষাবাদ করেছেন। এতে তার ভালো ফলন হয়েছে। আমরা সার্বক্ষণিক তাকে সহযোগিতা করছি। জাহিদুল ইসলামের বাগানের আঙুর সুমিষ্টি। তাই তার বাগানে নতুন নতুন উদ্যেক্তা আসছে। জাহিদুল ইসলাম ২০ শতাংশের জায়গার ওপর বাগান করেছে। আগামীতে আরো বেশি জায়গা নিয়ে আঙুর চাষ করা হবে। সখীপুরের লাল মাটিতে আঙুরসহ দেশি-বিদেশি নানা ধরনের ফলের চাষ হচ্ছে। নতুন উদ্যোক্তাদের সার্বিক সহযোগিতা করা হবে বলে তিনি জানান।