জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার বরাইল ও বড়তারা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় পরীক্ষামূলকভাবে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন ছয় কৃষক। বরাইল ইউনিয়নের কুসুমশহর ও বড়তারা ইউনিয়নের কর্ণপাড়া এলাকা ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ক্ষেতলাল উপজেলা কৃষি বিভাগের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছয় কৃষক মিলে প্রায় এক হেক্টর জমিতে এবার পরীক্ষামূলক গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ শুরু করেন। তরমুজ চাষে নেওয়া হয়েছে অর্গানিক ও মালচিং পদ্ধতি। পোকামাকড় দমনে ব্যবহার করা হয়েছে ফেরোমন ফাঁদ ও ইয়েলো কার্ড। বর্তমানে ইয়েলো কিং, অনুভব, ইয়েলোবার ও ব্লাকবেবি জাতের তরমুজ দোল খাচ্ছে মাচায় মাচায়। সেই সঙ্গে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন। কৃষক অনিল চন্দ্র বলেন, ৮০ শতাংশ জমিতে উপজেলা কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতায় এবার গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করেছি। এতে ৭০ হাজার টাকা খরচ হলেও এরইমধ্যে এক লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন এবং আরো দুই লাখ টাকা বিক্রি হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। ইয়েলো কিং, ব্লাকবেবি ও অনুভব জাতের তরমুজ চাষ করেছেন অনিল চন্দ্র। জমিতে মালচিং পেপার ব্যবহারের পাশাপাশি পোকামাকড় দমনে ব্যবহার করা হয়েছে ফেরোমন ফাঁদ ও ইয়েলো কার্ড। মাচায় তরমুজগুলো ঝুলে রয়েছে এবং প্রতিটি তরমুজ নেটিং করা হয়েছে। তরমুজের ভেতরের অংশে লাল ও হলুদ। খেতে বেশ সুস্বাদু। ক্ষেতলাল উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে প্রশিক্ষণসহ বিনামূল্যে উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ, মালচিং পোপার, ফেরোমনফাঁদ ও জৈব সার দিয়েছে। ভালো ফলন হওয়া এবং মাচায় তরমুজ দোল খাচ্ছে দেখে স্বপ্নও দোল খাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। কমল চন্দ্র, অনিল, কৃষ্ণসহ ওই এলাকার ছয় কৃষক প্রথমবার পরীক্ষামূলক গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করে সফলতা পেয়েছেন বলে জানান, উপজেলা কৃষি অফিসার জাহিদুর রহমান। তিনি বলেন, এ অঞ্চলের মাটি তরমুজ চাষের জন্য বেশ উপযোগী। সে কারণে প্রথম বারের মতো পরীক্ষা মূলক তরমুজ চাষে উদ্বুদ্ধ করতে ছয় কৃষককে উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ রাহেলা পারভীন, প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. এনামুল হক ও অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) কৃষিবিদ মো. শহিদুল ইসলাম ক্ষেতলাল উপজেলায় চাষ হওয়া গ্রীষ্মকালীন তরমুজের জমিগুলো পরিদর্শন করেন এবং কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করেন।