শিম সবসময় শীতের সবজি হিসেবে সমাদৃত। তবে বর্ষাকালেও শিম চাষ হচ্ছে। এ শিম চাষে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের আশিদ্রোন ইউনিয়নের ডেংগারবন গ্রামের কৃষকরা লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছেন। চলতি বছর ওই গ্রামের প্রায় ২৫ জন কৃষক ৫ হেক্টর জমিতে এই শিম চাষ করেছেন। এই আবাদ থেকে কৃষকরা প্রায় ৮০ লাখ টাকা আয় করবেন বলে ধারণা করছে উপজেলা কৃষি অফিস। সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. মো. শহীদুল ইসলাম উদ্ভাবিত সিকৃবি শিমণ্ড১ ও সিকৃবি শিমণ্ড২ এই নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিল। স্থানীয় কৃষকরা জানান, প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকায়। এছাড়া দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেকেই তাদের কাছ থেকে শিমের বীজ কিনে নেন। জানা যায়, আমিষ সমৃদ্ধ এই সবজির ফুল ও ফল ধারণ খাটো দিবসের (শর্ট ডে) ওপর নির্ভরশীল। ফসলটি আলো সংবেদনশীল (ফটো-সেনসিটিভ) হওয়ায় এর প্রাপ্যতা প্রধানত শীতকালেই সীমাবদ্ধ ছিল। শ্রীমঙ্গল কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, একটি গাছ লাগানোর ৪০ দিনে ফুল ও ফল আসে, ৫০ দিন থেকে বিক্রির উপযোগী হয়। একটি গাছ প্রায় ২ বছর পর্যন্ত বাঁচে। এই শিম গাছ থেকে সহজে বীজ সংগ্রহ করা যায়। ডেংগারবন গ্রামে প্রথম দিকে শিমের আবাদ শুরু করেন আহসান হাবিব। তিনি বলেন, ২০১৬ সালের দিকে কৃষি অফিস থেকে মাত্র ১২টি শিমের বীজ পেয়ে বাড়ির আঙিনায় লাগাই। সেই গাছগুলোর ফলন থেকে বীজ সংগ্রহ করে পরে বড় জায়গা নিয়ে শিমের চাষ শুরু করি। গত বছর ১ বিঘা জমিতে এই শিম চাষে খরচ হয়েছিল ১৮ হাজার টাকা। সেখান থেকে প্রায় ৩ লাখ টাকার শিম বিক্রি করেছিলাম। শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মহিউদ্দিন বলেন, আমরা সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রীষ্মকালীন শিমের সিকৃবি-১ জাতটির বীজ সংগ্রহ করে কৃষকের মধ্যে বিতরণ করেছি। কৃষকের এই গ্রীষ্মকালীন শিম চাষের ওপরে প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য উপকরণও সরবরাহ করা হয়েছে। শ্রীমঙ্গলের প্রায় ৫ হেক্টর জমিতে এই গ্রীষ্মকালীন শিমের চাষাবাদ হয়েছে। বাজারে এই সময়ে শিম না থাকায় কৃষক ভালো দাম পাচ্ছেন। আশা করা যায়, মাত্র ৫ হেক্টর জমি থেকে কৃষকরা ৮০ থেকে ৮৫ লাখ টাকার শিম বিক্রি করতে পারবেন। মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা পরীক্ষামূলকভাবে জেলা সদর উপজেলা ও শ্রীমঙ্গলে প্রদর্শনী আকারে করেছি। অনেক কৃষক আগে শিম বীজ সংগ্রহ করেছেন। তারা এখন নিজেদের জমিতে আবাদ করছেন।