ডিমের দাম লাগামছাড়া। আর মৌসুম চললেও এক কেজি ইলিশের দাম বাজারভেদে ১ হাজার ৮০০ টাকা থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা। চাল, ডাল, সবজি, মাছ ও মাংস বিক্রি হচ্ছে আগের বাড়তি দামেই। গতকাল সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। বাজারে এক ডজন ডিমের দাম ১৭০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। ডজনের কমে ডিম কিনলে প্রতিটির দাম ১৫ টাকা। অপেক্ষাকৃত কম আয়ের লোকেদের জন্য এ যেন বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দিকে ইলিশের ভরা মৌসুম হলেও দাম চড়া। ২৫০ থেকে ৩০০ গ্রাম ইলিশের দাম ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। আধা কেজি থেকে এক কেজির ইলিশ ৯০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশের দাম ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত। ছুটির দিনে ইলিশ কিনবেন বলে যারা বাসা থেকে বের হয়েছেন, তারা রীতিমতো অবাক হয়েছেন। বিক্রেতাদের কথা, নিলে নিন, না নিলে যান। তাদের বক্তব্য, তারা কম দামে কিনতে না পারলে কম দামে দেবেন কীভাবে।
আগের বাড়তি দামেই গরুর মাংসের কেজি বাজারভেদে ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। খাসির মাংসের কেজি ১ হাজার ১০০ টাকা পর্যন্ত। ব্রয়লার মুরগির কেজি বাজারভেদে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা। সোনালি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা, লেয়ার ৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দেশি প্রতি কেজি মুরগি বাজারভেদে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজারে সব ধরনের মাছ আগের বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। কম আয়ের শ্রমজীবী মানুষের আমিষের জোগানদাতা সিলভার কার্পের কেজি ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা। দেড় থেকে দুই কেজি বা তার বেশি ওজনের সিলভার কার্পের কেজি ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা। তেলাপিয়ার কেজি ২০০ টাকা, কই মাছ ২০০ থেকে ২৬০ টাকা পর্যন্ত। চাষের পাঙাশ মাছের কেজি ১৫০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা পর্যন্ত। রুই ও কাতলার কেজি ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ টাকা, বাইম ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ৭০০ টাকা, বড় বোয়াল ৮০০ টাকা, ছোট ৫০০ টাকা, চিংড়ি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, বেলে ১ হাজার ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি ওজনের আইড় ৭৫০ টাকা। চাষের শিং মাছ ৫৫০ টাকা। পাবদার কেজি ৬০০ টাকা। মলা মাছের কেজি ৫০০ টাকা।
রাজধানীর চালের বাজারে নতুন করে বাড়েনি চালের দাম। আগে দাম বেড়ে যাওয়া প্রতি কেজি চিকন চাল বাজার ও ধরনভেদে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি মানের চিকন চালের কেজি ৬৫ টাকা, পাইজাম ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা, স্বর্ণা ও আটাশ চালের কেজি ৫৫ টাকা। মসুর মোটা ডালের কেজি ১০০ টাকা, চিকন ডাল ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, মুগ ডাল ১৩০ টাকা। ছোলার ডাল ৯০ টাকা কেজি। আলুর কেজি ৪০ টাকা, আদা ২৪০ টাকা। দেশি পেঁয়াজ ৮০ টাকা, আমদানি করা পেঁয়াজ ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। রসুনের দাম বেড়েছে। সব রসুনের কেজি এখন ২২০ থেকে ২৩০ টাকা। ভোজ্য তেলের দাম নতুন করে বাড়েনি। প্রতি লিটার সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। বোতলজাত পামওয়েলের লিটার ১৫০ টাকা। প্যাকেটজাত চিনি ১৫০ টাকা। খোলা দুয়েক জায়গায় ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বেগুনের কেজি ৮০ টাকা, ঝিঙা ৮০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, উচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২৪০ টাকা, ভেন্ডি ৭০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, ক্যাপসিকাম ৪০০ টাকা, শসা ১০০ থেকে ১২০ টাকা, টমেটো ২৬০ টাকা, গাজর ১৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকা। কাঁচা কলার হালি ৪০ টাকা। রাজধানীর বাজারে পণ্যের মূল্য তালিকা টাঙানোর রাখার নির্দেশনা থাকলেও এসবের মধ্যে দুয়েকটি বাদে কোথাও তালিকা দেখা যায়নি। একজন ক্রেতা জানান, দোকানে মূল্য তালিকা থাকে না, দেখার কেউ নেই। কথা বলতে গেলে দোকানিরা মাস্তানের মতো আচরণ করেন।