প্রেমিকা-স্বামী গ্রেপ্তার

কুমিল্লায় পরকীয়ার জেরে যুবক হত্যা

প্রকাশ : ১২ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লার চান্দিনায় পরকীয়ার জেরে আরিফ হোসেন নামে এক যুবককে হত্যার ঘটনায় পুলিশ ২৪ ঘণ্টা টানা অভিযান চালিয়ে প্রেমিকা ফাতেমা বেগম ও তার স্বামী শুক্কুর আলীকে গ্রেপ্তার করে গতকাল আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে। নিহত যুবক আরিফ হোসেন সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার সাতগাঁও গ্রামের আলাই মিয়ার ছেলে। গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছে একই উপজেলার ছত্রিশ কালিপুর গ্রামের মৃত আবদুল গফুরের ছেলে শুক্কুর আলী ও তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম। নিহত ওই যুবকসহ তারা কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মাইজখার ইউনিয়নের করতলা এলাকায় পৃথক ভাড়া বাসায় থেকে রাজমিস্ত্রির কাজ করত। গতকাল শুক্রবার দুপুরে কুমিল্লা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান। প্রেসব্রিফিংয়ে তিনি আরো জানান, প্রায় ১০ বছর আগে শুক্কুর আলী ও ফাতেমা বেগমের বিয়ে হয়। এ দম্পতির ৪ সন্তান রয়েছে। শুক্কুর আলী রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। কাজের সুবাদে প্রায় ৩ বছর আগে রাজমিস্ত্রি আরিফ হোসেনের সঙ্গে তার বন্ধুত্বের সম্পর্ক হয় এবং আরিফ প্রায়সময় তার বাড়িতে যাওয়া-আসা করতেন। এরই মধ্যে শুক্কুরের স্ত্রী ফাতেমার সঙ্গে আরিফের পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে গত প্রায় এক মাস আগে যুবক আরিফ ও ফাতেমা গোপনে ছাতক থেকে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার করতলা গ্রামে পালিয়ে আসেন। সেখানে একটি বাড়িতে ঘর ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন এবং বিয়ের জন্য ফাতেমা আরিফকে চাপ সৃষ্টি করেন। কিন্তু আরিফ বিয়ে না করে ফাতেমার সঙ্গে টালবাহানা শুরু করে। এতে ফাতেমা নিশ্চিত হন আরিফ তাকে বিয়ে করবে না। ফাতেমা ক্ষুব্ধ হয়ে তার স্বামী শুক্কুর আলীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেন এবং তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করলে শুক্কুর আলী গত সোমবার আরিফের বাসায় আসেন। এ সময় আরিফ বাসায় ছিলেন না। এ সুযোগে ফাতেমা তার প্রেমিক আরিফকে হত্যার জন্য শুক্কুর আলীর সঙ্গে পরিকল্পনা করেন। এদিন রাতে শুক্কুর আলী আরিফের বাসার চৌকির নিচে লুকিয়ে থাকেন। রাত ১০টার দিকে আরিফ বাসায় এসে ঘুমিয়ে পড়লে পরিকল্পনা অনুযায়ী রাত ২টার দিকে শুক্কুর আলী ও ফাতেমা বেগম লোহার শাবল দিয়ে আরিফের মাথায় আঘাত করেন এবং গলায় গামছা পেঁচিয়ে ও নাকে-মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে আরিফের মরদেহ গুম করার জন্য প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে বিছানার চাদর দিয়ে মুড়িয়ে বাসার পাশের একটি মাছের খামারে ফেলে তারা পালিয়ে যান। পরদিন পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে এবং অভিযান পরিচালনা করে গত বৃহস্পতিবার রাতে জেলার দেবীদ্বার উপজেলার ওয়াহিদপুর এলাকা থেকে ঘাতক শুক্কুর আলী ও ফাতেমাকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই তারিছ আলী বাদী হয়ে চান্দিনা থানায় মামলা দায়ের করেন।

প্রেসব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন জেলার দাউদকান্দি সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার এনায়েত কবীর সোয়েব, চান্দিনা থানার ওসি মো. সাহাবুদ্দিনসহ পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তারা।