দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা করার মতো কোনো বিষয় নেই। তবে নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ। গতকাল রোববার দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ঢাকা সফররত দুই মার্কিন কংগ্রেসম্যান বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সরকারের পরিকল্পনা জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন তাদের এ কথা জানান। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মন্ত্রী। চারদিনের সফরে গত শনিবার ঢাকায় আসেন দুই মার্কিন কংগ্রেসম্যান। তারা হলেন- যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান দলের জর্জিয়ার কংগ্রেসম্যান রিক ম্যাক্রোরমিক এবং হাওয়াইয়ের ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান এড কেইস। সফরের দ্বিতীয় দিন তারা বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানেই জাতীয় নির্বাচন ঘিরে বিভিন্ন বিষয় আলোচনায় উঠে আসে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার বিষয়ে কংগ্রেমম্যানরা কোনো বার্তা দিয়েছেন কি না, জানতে চাইলে ড. মোমেন বলেন, রিপাবলিকান দলের কংগ্রেসম্যান (রিক ম্যাক্রোরমিক) বললেন, ‘আমরা সবসময় সমঝোতায় যাই।’ আমরা উনাকে বলেছি, সমঝোতা করার মতো দাবি-দাওয়া তো এখানে (বাংলাদেশে) নেই। তবে আমরা চাই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। আমাদের উল্টা দল (বিএনপি) তো নির্বাচনের খবরই রাখে না। তারা চায় সরকারের পতন। সরকার পতনের ইস্যু তো সংলাপে যাওয়ার মতো কোনো টপিক নয়। দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর আন্তরিকতা থাকলে সুষ্ঠু এবং সহিংসতামুক্ত নির্বাচন সম্ভব বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যতগুলো দল আছে সব দল যদি নির্বাচনে অংশ নেয়, তারা যদি আন্তরিকভাবে অবাধ, সুষ্ঠু ও সহিংসতামুক্ত নির্বাচন চায়, তাহলে সহিংসতা ছাড়াই নির্বাচন সম্ভব। সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে সহিংসতা ছাড়া নির্বাচন হবে। তবে সরকার বা নির্বাচন কমিশন চাইলেই সহিংসতা ছাড়া নির্বাচনের বিষয়ে গ্যারান্টি দেওয়া যায় না বলে জানান ড. মোমেন। বৈঠক প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা তাদের (কংগ্রেসম্যানদের) বলেছি, এখানে নির্বাচন তোমাদের ওখানের (যুক্তরাষ্ট্র) চেয়ে ভালো হয়। তোমাদের ওখানে লোকে ভোট দেয় না। আমাদের এখানে অধিকাংশ লোক ভোট দেয়। তোমাদের ওখানে লোক নির্বাচনে দাঁড়ায় না। এখানে একটা নির্বাচনে কয়েকশ’ প্রার্থী থাকে। প্রার্থী বেশি হলেও আমাদের এখানে কোনো অসুবিধা হয় না। শুধু সব দল ও মতের লোকের আন্তরিকতা দরকার। যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচন নিয়ে কোনো ফর্মুলা দিচ্ছে কি-না বা নির্বাচন সুষ্ঠু হবে- এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র আশ্বস্ত কি-না, জানতে চাইলে ড. মোমেন বলেন, না। সেটা তাদের জিজ্ঞেস করেন।