দেশের নতুন প্রজন্ম তাদের লালিত স্বপ্ন পূরণে বঙ্গবন্ধুর অদম্য চেতনা এবং জীবন ও কর্ম অনুসরণ করছে। ঢাকা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি (ডিইউডিএস)-এর সাধারণ সম্পাদক ফুয়াদ হোসেন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর সমগ্র জীবনে আমরা দেশপ্রেম, মানবতা, তার রাজনৈতিক এবং শিক্ষাগুরুদের প্রতি শ্রদ্ধার নিখুঁত উদাহরণ খুঁজে পাই, তাকে গণমানুষের মহান নেতা এবং হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে গড়ে তুলেছে।
বঙ্গবন্ধুর শাহাদতবার্ষিকীর প্রাক্কালে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর অসাধারণ নেতৃত্বের দক্ষতা, বাগ্মিতা, প্রশংসনীয় ব্যক্তিত্ব, সততা, নিষ্ঠা ও অবিসংবাদিত জীবনশৈলী প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে তরুণদের অনুপ্রেরণার এক বিরাট উৎস হয়ে থাকবে।
বঙ্গবন্ধু আমৃত্যু জনগণের অধিকার এবং সাধারণ মানুষের মুক্তির জন্য সংগ্রাম করেছেন উল্লেখ করে হোসেন বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান দেশের সীমা ছাড়িয়ে সারা বিশ্বের শোষিত মানুষের জন্য সংগ্রামের প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির শায়ন বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, রাজনৈতিক নিষ্ঠা ও জাদুকরি ভাষণগুলো সারা বিশ্বের মানুষের বিশেষ করে তরুণ-যুবকদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হিসাবে থাকবেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম আমাদের জন্য এক পাঠ্যপুস্তক।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকা বলেন, দলমত নির্বিশেষে সবাই একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলার জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালালে শোষণের শিকল ভেঙে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়া সম্ভব। তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকেই বঙ্গবন্ধুর অতুলনীয় মানবিক গুণাবলী এবং জনগণের প্রতি গভীর ভালোবাসা তাকে জনগণের নেতা হিসেবে গড়ে তুলেছিল।
অবন্তিকা আরো বলেন, ‘তরুণ মুজিব সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের বাড়িতে নিয়ে আসতেন এবং মাকে তাদের খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করতে বলতেন।’
ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক তানবীর হাসান সৈকত বলেন, বঙ্গবন্ধু তার সমগ্র জীবন দেশের মানুষের জন্য উৎসর্গ করেছেন এবং মোট ৪ হাজার ৬৮২ দিনের কারাবরণসহ অগণিত দিন নির্যাতিত হয়েছেন।
তরুণরা বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে দেশের মানুষের জন্য কতটা নিঃস্বার্থভাবে ত্যাগ স্বীকার করতে হয় তা শিখতে পারেন। তিনি বিশ্বের স্বাধীনতাপ্রেমী মানুষকে পথ দেখিয়েছেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) লোকপ্রশাসন বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী তাসমিয়া মেহরিন বঙ্গবন্ধুকে অসীম সাহসের প্রতীক এবং এক নির্ভীক বীর বলে অভিহিত করেন।
‘আজ থেকে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চরীয় প্রদেশের নাম পূর্ব পাকিস্তানের পরিবর্তে হবে শুধু বাংলাদেশ’- বঙ্গবন্ধুর এ উক্তি উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, তিনি (বঙ্গবন্ধু) সেই ব্যক্তি যিনি বাঙালিদের সংগ্রাম করে স্বাধীনতা অর্জনের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে জাতির পিতার অবদানের কথা স্মরণ করে জাবি শিক্ষার্থী বলেন, বঙ্গবন্ধু শিখিয়েছেন, শোষণ থেকে মুক্তি পেতে লড়াইয়ের বিকল্প নেই।
তাসমিয়া বলেন, বাংলাদেশ এখন স্বাধীন হলেও বাঙালিরা ‘যদি রাত পোহালে শোনা যেত বঙ্গবন্ধু মরে নাই’ তাহলে বাঙালি আরও বেশি সুখী হতো।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান অন্যায়ের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর আজীবন সংগ্রামের কথা স্মরণ করে বলেন, ‘জাতির পিতা আমার কাছে দমন ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে এক কামান।’
শিক্ষার বৈষম্যই দমন-পীড়নের মূল অস্ত্র-এটি বঙ্গবন্ধু উপলব্ধি করেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘১৯৭০ সালের ২৮ অক্টোবর তৎকালীন অবিভক্ত পাকিস্তানের সাধারণ আগে নির্বাচনের প্রক্কালে জাতির উদ্দেশ্যে রেডিও-টেলিভিশন ভাষণে বঙ্গবন্ধু শিক্ষাক্ষেত্রে অব্যাহত বৈষম্যের কথা তুলে ধরেন। ইংরেজি বিভাগের ছাত্র মামুন বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর একটি প্রাথমিক উদ্যোগ ছিল ১৯৭২ সালের ২৬ জুলাই তারিখে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মো. কুদরাত-ই-খুদার নেতৃত্বে জাতীয় শিক্ষা কমিশন গঠন।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী মো. রনি মোল্লা বলেন, বঙ্গবন্ধুই সেই নেতা যিনি সকল প্রকার অনিয়ম ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন।
মোল্লা আরেঅ বলেন, ‘জাতির পিতার বজ্রকণ্ঠ আমাদের সমগ্র জাতির জন্য বিরাট অনুপ্রেরণা এবং গর্ব। তিনি আমাদের জন্য এক অনুকরণীয় আদর্শ। ঢাকা মেডিকেল কলেজের পঞ্চম বর্ষের ছাত্র নাইম হাসান স্বাধীন বাংলাদেশে চিকিৎসকদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনার কথা স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আমাদের মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে আমাদের ডাক্তারদের গ্রামে যেতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।’