জাতীয় শোক দিবস পালনে চট্টগ্রাম বন্দরে দিনব্যাপী কর্মসূচি
প্রকাশ : ১৬ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রাম ব্যুরো
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় গতকাল মঙ্গলবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। সকাল ৬টায় বন্দর ভবনসহ বন্দরের সব দপ্তর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও জলযানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতভাবে উত্তোলন করা হয়। এছাড়াও বন্দর কর্তৃপক্ষ মাসব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সকাল ৯টায় বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল ও চবকের সদস্যরা বন্দর ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। সকাল সাড়ে ৯টায় বন্দর ভবন চত্বরে বৃক্ষরোপণ করা হয়। এতে চবকের সব বিভাগীয় প্রধানসহ সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বন্দর কর্মচারী পরিষদ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য এমএ লতিফ ও চবক চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েলের নেতৃত্বে এক বিশাল শোক র্যালি বন্দর ভবন থেকে কাস্টম মোড় হয়ে বন্দর উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। র্যালি শেষে শহীদ ফজলুর রহমান মুন্সি অডিটোরিয়ামে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীসহ চবক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও অবদান বিষয়ে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এমএ লতিফ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল। এছাড়াও বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্যরা বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথি এমএ লতিফ এমপি তার বক্তব্যের শুরুতে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্ট নিহত সব শহীদদের। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্য আমরা এই বাংলাদেশ পেয়েছি, বাঙালি জাতি পেয়েছে স্বাধীনতার স্বাদ। তিনি বাংলাদেশে নারীদের অগ্রযাত্রায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার অবদানের কথা তুলে ধরেন। তিনি নারী জাতিকে সমানভাবে সমান সুযোগ দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি আরো বলেন বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা অর্জনে বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার অবদান রয়েছে, তিনি না হলে এ সমুদ্র সীমা অর্জিত হতো না। চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, বঙ্গবন্ধু হলেন হাজার বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি। তিনি জীবনের সব ক্ষেত্রে জাতির পিতাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে জাতির পিতার নির্দেশনা মেনে চলার এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, জাতির পিতার রক্তে গড়া এ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, দেশের অগ্রগতি ও উন্নয়নে একাত্ম হয়ে সবাইকে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করতে হবে। আজকের দিনটি জাতির জন্য কলঙ্কিত একটি দিন, এ দিনে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলতুন নেছা মুজিবসহ ১৫ আগস্টে নিহত সব শহীদদের। ১৯৭১ সালে যেসব শহীদরা দেশের জন্য আত্মাহুতি দিয়ে দেশের স্বাধীনতা অর্জনকে এগিয়ে নিয়েছেন তাদেরও স্মরণ করছি। পাশাপাশি ১৯৭১ সালের শহীদ সব বন্দর কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। জাতির পিতার বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন- তোমরা দেশকে ভালোবাস, তোমরা বাংলাদেশের মানুষকে ভালোবাস। এদিকে বাদজোহর বন্দর চেয়ারম্যান, সদস্যরা ও বিভাগীয় প্রধানরা ৮নং সড়কস্থ বন্দর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে দোয়া মাহফিলে অংশগ্রহণ করেন। পরে দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে চট্টগ্রাম বন্দর কর্মচারী পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত শোক সভা, খতমে কোরআন ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে এমএ লতিফ এমপি এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল উপস্থিত ছিলেন। চট্টগ্রাম বন্দর কর্মচারী পরিষদের সভাপতি মো. আজিম সভায় সভাপতিত্ব করেন এবং সাধারণ সম্পাদক নায়েবুল ইসলাম ফটিক অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।