সুসংবাদ প্রতিদিন
বস্তায় আদা চাষ করে লাভের আশা
প্রকাশ : ১৭ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আলোকিত ডেস্ক
বাড়ির পাশের একটি পরিত্যক্ত সুপারি বাগানে বস্তায় আদা চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন স্কুল শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক রুবেল। বর্তমানে তিনি এই আদা চাষ করে ৭ লাখ টাকা আয়ের আশা করছেন। করোনাকালীন অবসর সময়কে কীভাবে কাজে লাগানো যায় এবং বাড়ির পাশে সুপারি বাগানে বাড়তি কোনো ফসল ফলানো যায়, তা নিয়ে ভাবতে থাকেন তিনি। পরামর্শ নেয় স্থানীয় কৃষি বিভাগ থেকে। অবশেষে সুপারি বাগানের গাছের ফাঁকে ফাঁকে ৪০ শতক জমিতে বস্তায় আদা চাষের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। আব্দুর রাজ্জাক রুবেল লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা ডাকালীবান্ধা সমসের উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। আব্দুর রাজ্জাক রুবেল জানান, করোনার সময় বেশির ভাগ মানুষ অলস সময় পার করেছেন। ওই সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যে স্কুল শিক্ষক রুবেলের ভাগ্য বদলে দেবে, সেটি তিনি ভাবতেও পারননি। শুরুতে সুপারি বাগানের ফাঁকে বস্তায় করে অল্প আদা চাষ শুরু করেন। পরে ওই আদা চাষ করার পর মোটামুটি ভালো আয় করেন তিনি। এবার ৪০ শতক জমিতে প্রায় ৫ হাজার ৫০০ বস্তায় আদা চাষাবাদ করেন। সব মিলে তার প্রতি বস্তায় খরচ হয়েছে প্রায় ৪০ টাকা। প্রতি বস্তায় ৭০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি পর্যন্ত আদার ফলন হয়ে থাকে। এতে তার মোট ২ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এ থেকে ৭ লাখ টাকা আয় হবে বলে দাবি করছেন তিনি। তরুণ শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক রুবেলের এমন উদ্যোগে গ্রামের অনেক লোক বস্তায় আদা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। এলাকাবাসী জানান, প্রথমে সুপারি বাগানের ফাঁকে আদা চাষ হয় তারা জানতেন না। পরে স্কুল শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক রুবেলের বস্তায় আদা চাষ দেখে অনেকেই অবাক হয়ে যান। আব্দুর রাজ্জাক রুবেল আরো বলেন, প্রথমে বেলে দো-আঁশ মাটি সংগ্রহ করে সেই মাটি ব্লিসিং পাউডার ও ডলোচুন দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হয়। তারপর কিছু দিন ফেলে রেখে সেই মাটির সঙ্গে গোবর, কাঠের গুড়া ও রাসানয়িক সার মিশিয়ে ১০ থেকে ১২ দিন রাখা হয়। এরপর বস্তায় মাটি ভর্তি করে সুপারি গাছের ফাঁকে ফাঁকে রেখে আদার বীজ রোপণ করতে হয়। ৪০ শতক জমিতে প্রায় ৫ হাজার ৫০০ বস্তায় আদা চাষাবাদ করছি। এর আগেও একবার বিক্রি করেছি। তখনও ভালো লাভ হয়েছে। তাই এবার ২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছি। আশা করছি ভালো লাভ পাব। হাতীবান্ধা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাহাবুব আলম জানান, আদা একটি লাভজনক চাষাবাদ। সঠিক পরিকল্পনায় চাষাবাদ করলে ২ থেকে ৩ গুণ লাভ হতে পারে। পাশাপাশি ছায়া জমি বা যে জমিতে অন্য ফসল হয় না, সেই জমিতেও আদা চাষ করা সম্ভব। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন মিয়া জানান, অনেকেই এখন বাণিজ্যিকভাবে আদা চাষ করছে। তাদের মধ্যে স্কুল শিক্ষক রুবেল মিয়া একজন। আশা রাখছি, তিনি শতভাগ সফল ও লাভবান হবেন।