দেশে প্রথম বৈদ্যুতিক গাড়ির চার্জিং স্টেশন উদ্বোধন

প্রকাশ : ১৭ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে প্রথমবারের মতো বৈদ্যুতিক চার্জিং স্টেশনের যাত্রা শুরু হয়েছে। গতকাল বুধবার তেজগাঁও প্রোগ্রেস মটরস ইমপোর্টস লিমিটেডের অফিসে চার্জিং স্টেশনটি উদ্বোধন করা হয়। এতে ডিপিডিসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী বিকাশ দেওয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব এবং ডিপিডিসি’র পরিচালনা পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মো. হাবিবুর রহমান, বিশেষ অতিথি টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) চেয়ারম্যান মুনীরা সুলতানা, প্রোগ্রেস মটরস ইমপোর্টস লিমিটেডে’র পরিচালক (অর্থ) মো. হাসিব উদ্দিন।

ইলেক্ট্রনিক ভেহিক্যাল বা ইভির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠবে চার্জিং স্টেশন। সে কথা চিন্তা করে চার্জিং স্টেশন নির্মাণে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) ও প্রোগ্রেস মটরস ইমপোর্টস লিমিটেড’র মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর ও উদ্বোধন করা হয়। কারণ, দেশকে দূষণমুক্ত করতে পরিবেশবান্ধব গাড়ির ওপর জোর দিয়েছে সরকার। বিদ্যুৎচালিত গাড়ি বাড়াতে বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এতে পেট্রোল-ডিজেলের ওপর নির্ভরতা কমে আসবে।

অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব হাবিবুর রহমান বলেন, দেশে বিদ্যুচ্চালিত গাড়ির জন্য চার্জিং স্টেশন উদ্বোধনের অপেক্ষায় ছিলাম। কারণ বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সেখানে আমরা কেন গাড়ির বৈদ্যুতিক চার্জিংয়ে পিছিয়ে থাকব, সেজন্য ২০২২ সালে ইভির জন্য নীতিমালা করা হয়। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে বৈদ্যুতিক গাড়ির সংখ্যা বাড়বে। আর ভবিষ্যতে দেশের পাড়া-মহল্লার বৈদ্যুতিক চার্জিং স্টেশন গড়ে উঠবে।

তিনি আরো বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগের বিভিন্ন সংস্থাপনের মধ্যে ডিপিডিসি প্রথম বৈদ্যুতিক চার্জিং স্টেশন স্থাপন করল। বাংলাদেশের ইতিহাসের পাতায় ডিপিডিসি দেশের জন্য মাইলফলক হিসেবে থাকবে। ইভির যাত্রা শুরু হয়েছে, গণমাধ্যমের মাধ্যমে দেশজুড়ে তা প্রচার করতে হবে। কারণ, সবাই যেন বৈদ্যুতিক চার্জিং স্টেশন স্থাপনের উদ্যোগ নেয়।

অনুষ্ঠানে হাসিব উদ্দিন বলেন, প্রোগ্রেস মটরস ইমপোর্টস লিমিটেড ২০২২ সালের শেষের দিকে ইভি গাড়ির যাত্রা শুরু করি। কারণ, আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য পৃথিবীকে আর ধ্বংস করতে চাই না। সেজন্য ইভি গাড়ির ওপর জোর দিয়েছি। কিন্তু ইভি গাড়ি সরবরাহের আগেই চার্জিং স্টেশনের প্রয়োজন রয়েছে। ২০২৪ সালের মধ্যে সারাদেশে ১১টি চার্জিং স্টেশন স্থাপন করা হবে। চার্জিং স্টেশনে একটি বৈদ্যুতিক গাড়িকে ২০ থেকে ৩০ মিনিটে ফুল চার্জ করা সম্ভব, যা ৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত গাড়ি চলবে।

প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনা অনুযায়ী স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অন্যান্য খাতের মতো পরিবহণ খাতেরও বৈপ্লবিক রূপান্তর হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবিলা ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কার্বনমুক্ত পরিবহণ খাত বির্নিমাণে জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক যোগাযোগব্যবস্থাকে সবুজ জ্বালানিভিত্তিক করতে কাজ করছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রচলন ও পরিচালনার সঙ্গে বিদ্যুৎ খাত সরাসরি সংশ্লিষ্ট। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহার ক্রমশ বাড়ছে। বৈদ্যুতিক গাড়ির চার্জিং অবকাঠামো স্থাপনের কার্যক্রম তত্ত্বাবধানে বিদ্যুৎ বিভাগের অঙ্গসংস্থা হিসেবে ডিপিডিসি বদ্ধপরিকর এবং বর্তমান বিশ্ববাস্তবতায় অংশগ্রহণমূলক, টেকসই ও সাশ্রয়ী অবকাঠামো নির্মাণে অঙ্গীকারবদ্ধ। বৈদ্যুতিক গাড়িতে পরিবশে দূষণ কম, শব্দ দূষণ হয় না। এছাড়া যাতায়াত এবং রক্ষণাবেক্ষণ খরচ কম।