বাজার দর
বেড়েছে সবজি-মুরগি কমেছে ডিমের দাম
প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
বাজারে কমেছে ডিমের দাম। অন্যদিকে দাম বেড়েছে সবজি ও মুরগির। এছাড়া বাজারে অপরিবর্তিত মূল্যে বিক্রি হচ্ছে অন্য সব পণ্য। গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর মিরপুর ১১ নম্বর ও কালশী বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। বাজারে দাম বেড়েছে সবজির। আকারভেদে লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। শসা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। লম্বা ও গোল বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা। ভারতীয় টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা। করলার কেজি ৮০ থেকে ৯০ টাকা। চাল কুমড়া প্রতিটি ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০, পটোল ৫০ থেকে ৬০, ঢ্যাঁড়স ৬০, কচুর লতি ৭০, পেঁপে ৪০, মুলা ৫০ টাকা, বরবটি ৮০ ও ধুন্দুল ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি। বাজারে কাঁচামরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা।
কালশী বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. মালেক বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় বাজারে সবজির দাম অনেক বেড়েছে। বৃষ্টির কারণে বাজারের সবজির সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে। এছাড়া বাজারে কাঁচা কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। বাজারে দাম বেড়েছে মুরগিরও। ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। গত সপ্তাহে ছিল ১৭০ টাকা। সোনালি মুরগির দাম কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকায়। গত সপ্তাহে ছিল ২৮০ টাকা। লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৪০ টাকা। মিরপুর ১১ নম্বর বাজারের মুরগি বিক্রেতা মো. রুবেল বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে বাজারে মুরগির দাম বেড়েছে। ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে। শুক্রবার ও বৃহস্পতিবার মুরগির দাম বাড়ে আর অন্য দিনগুলোতে মুরগির দাম কম থাকে। বাজারে গরুর মাংস দাম বেড়ে কেজি ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খাসির মাংসের কেজি ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা। ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। দেশি পেঁয়াজের কেজি ৭৫ থেকে ৮০ টাকা। দেশি আদার কেজি ২০০, চায়না আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা। আলুর ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। খোলা চিনি প্রতি কেজি ১৪০ টাকা। বাজারে খোলা আটার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। প্যাকেট আটার কেজি ৬৫ টাকা। দুই কেজির প্যাকেট আটা বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। দেশি মসুরের ডালের কেজি ১৪০ টাকা, ইন্ডিয়ান মসুরের ডালের কেজি ৯০ থেকে ১০০ টাকা।
সয়াবিন তেলের লিটার ১৭৮ টাকা, লবণের কেজি ৩৮ থেকে ৪০ টাকা। ফার্মের মুরগির ডিম কিছুটা কমে ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ থেকে ১৫০ টাকায়। হাঁসের ডিমের ডজন ২১০ টাকা। দেশি মুরগির ডিমের ডজন ২১০ টাকা। ডিম বিক্রেতা মো. রমজান বলেন, তিন দিনের ব্যবধানে ফার্মের মুরগির ডিমের ডজনে দাম কমেছে ১৫ টাকা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের কারণেই কমেছে ডিমের দাম।
এদিকে মাছবাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি রুই মাছ বিক্রি হয়েছে ৩২০ থেকে ৪৫০ টাকা। তেলাপিয়া, পাঙাশ মাছের কেজি বিক্রি হয়েছে ১৬০ থেকে ২০০ টাকায়। প্রতি কেজি শিংমাছ ৩৫০ থেকে ৪৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি কইমাছ বিক্রি হয়েছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। আর পাবদা মাছের কেজি বিক্রি হয়েছে ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা। অন্যদিকে মাছের বাজারে কম দামি হিসেবে পরিচিত পাঙাশের কেজি এখন ২৫০ টাকা। ৩৫০ টাকার নিচে মিলছে না কোনো মাছ। বিক্রেতারা বলছেন, কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির কারণে ঢাকার বাজারগুলোতে পণ্য সরবরাহ কম। তাতে সবজি ও মাছের দাম বেশ বেড়ে গেছে।
এদিকে কাঁচামরিচ ও টমেটোর বাজারের অস্থিরতা এখনো কাটেনি। অন্যান্য সবজির মতো নতুন করে আবারও আলুর দাম বাড়ছে। যদিও ফার্মের মুরগির ডিমের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কমেছে। তবে চিনির সংকট দিন দিন আরো গভীর হচ্ছে। অর্থাৎ, মোটাদাগে বাজারে ক্রেতাদের জন্য সুখবর নেই। তবে সরবরাহ কম থাকায় বেড়েছে মাছের দাম। ক্রেতারা মাছ কিনতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন। নদী ও হাওরের মাছ সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে অনেক আগেই।
চাষের মাছও এখন বেশ চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে। মগবাজার বড় বাজারের মাছ বিক্রেতা কালাম বলেন, গত শুক্রবারের চেয়ে এখন প্রতি কেজি মাছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেড়েছে। এতে আমাদের বেচাকেনা কমেছে। ক্রেতারা কম নিচ্ছেন।’
তিনি বলেন, ভরা মৌসুমেও এবার বাজারে ইলিশের দাপট নেই। এর প্রভাব পড়েছে অন্যান্য মাছের দামেও।
ওই বাজারে প্রতি ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি এবং ১ কেজি সাইজের ইলিশ ১ হাজার ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে। অন্যদিকে, মুদিবাজারে দীর্ঘদিন ধরে কাটছে না চিনির সংকট। বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। দোকানিরা ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন চিনি। এখনো প্যাকেট চিনি পাওয়া যাচ্ছে না অধিকাংশ দোকানে।
‘গরিবের মাছ’ পাঙাশ কিনতে হিমশিম খাচ্ছে মধ্যবিত্তরা। রাজধানীর মহাখালী বাজারে মাছ কিনতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী নূরূন নাহীদ তার তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করে বলেন, বাজারে গরিবের মাছ ছিল পাঙাশ, চাষের কই, তেলাপিয়া। কিন্তু এখন এসব মাছের দামও অতিরিক্ত বেড়ে গেছে, যা মধ্যবিত্তের জন্যও কেনা কঠিন। আগে পাঙাশ মাছ কিনেছি ১২০ থেকে ১৫০ টাকায়, তাও খুব বেশি ক্রেতা পেত না বিক্রেতারা।