কর্মজীবী নারীদের জীবন সম্পূর্ণ আলাদা। তারা একসাথে ঘর ও কর্মস্থল সামলায়। কাজের তাড়াহুড়ার মধ্যে তারা নিজের যত্ন নেওয়ার সময় পায় না। ডেস্ক জব করার ফলে শরীরে মেদ জমে যায়। তাই কর্মজীবী নারীদের খাদ্য তালিকা হওয়া উচিত স্বাস্থ্যসম্মত। খাবারে ভারসাম্যতা বজায় রাখলে শারীরিকভাবে নিজেকে ফিট রাখা অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। দৈনিক কাজের শত ব্যস্ততার মধ্যে একটি স্বাস্থ্যকর খাবারের পরিকল্পনা করা উচিত। ডা. মেঘনা পাসি, পুষ্টি পরামর্শদাতা, ইন্ডিয়াডটকমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘নারীরা পৃথিবীর সবচেয়ে ব্যস্ত প্রজাতি। তারপর আবার একজন মা কখনোই নিজেকে নিয়ে ভাবেন না। তিনি সবসময় তার সন্তানের জন্য চিন্তা করেন। এরপর নিজেকে নিয়ে ভাবেন’। একজন মা শিক্ষক, ডাক্তার, আইনজীবী, কাউন্সেলর, বিজ্ঞানী এবং আরো অনেক কিছু। তারপরও তার কাছে পরিবার বেশি প্রাধান্য পায়। কর্মজীবী মায়েরা সময় বাঁচাতে অফিসে প্রক্রিয়াজাত খাবার বহন করে থাকেন। এতে ওজন বেড়ে যায়। এছাড়া, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি থাকে। গর্ভাবস্থা, প্রসব এবং পরবর্তীতে মেনোপজের ফলে হাড়ের ক্ষয় হওয়া শুরু করে। ৩০’এ পৌঁছানোর পর, হাড়ের ক্ষয় ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। তাই প্রত্যের নারীরই নিজের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা- প্রতিটি বয়স, গোষ্ঠী, লিঙ্গ এবং শারীরিক কার্যকলাপের জন্য পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। একজন মহিলার প্রতিদিন ১ হাজার ৭০০ ক্যালোরির, ২৫ গ্রাম চর্বি, ৮০০ এমজি ক্যালসিয়াম, ১৫ এমজি আয়রন, ৪৫ গ্রাম প্রোটিনের প্রয়োজন হয়। তাই খাদ্য তালিকায় সব ধরনের পুষ্টি রাখার চেষ্টা করুন।
সকালের নাস্তা এড়িয়ে যাবেন না : শুধু কফি দিয়ে আপনার দিন শুরু করবেন না। নাস্তার প্লেটে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার রাখুন, যা আপনাকে মধ্যাহ্নভোজ পর্যন্ত শক্তি দেবে। স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস : স্ন্যাকস হিসেবে ভাজাপোড়া খাওয়া এড়িয়ে চলুন। চিনাবাদাম, ফল, নারিকের, দই খান। এগুলোর জন্য আপনাকে রান্না করতে হবে না। আপনার সময়ও বেঁচে যাবে।
মধ্যাহ্নভোজ : পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যতালিকা বেছে নিন। দুপুরের খাবারে ডিম, মাছ, মটরশুঁটি, ডাল, শাকসবজি, মাংস খেয়ে নিন। প্রোটিন জাতীয় খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন।
হ্যাপি ফুড : অতিরিক্ত কাজ এবং চাপ অনুভব করলে কলা, বেরি, মটরশুঁটি, ডার্ক চকলেট, নারকেল খান। এসব খাবার রয়েছে ফেনোলিক যৌগ, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যামিনো অ্যাসিড। এগুলো বিষণ্নতা কমাতে সাহায্য করে। তাই এসব খাবার হ্যাপি ফুড নামে পরিচিত। এই খাবারগুলো হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। খারাপ কোলেস্টেরল কমাতেও সাহায্য করে।
খাবারের পরিমাণ : একসাথে অতিরিক্ত খাবেন না। চেষ্টা করুন, খাবার দ্বিতীয় বার না নেওয়ার। একটি খাবার প্লেটে সব কিছু নিয়ে নিন। এবার আস্তে আস্তে খান। দেখবেন খাবারের পরিমাণ বজায় থাকবে।
হলুদের দুধ : হলুদের দুধ ক্যালসিয়ামের প্রয়োজনীয়তা মিটায়। ঘুমের উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়িয়ে দেয়। তাই রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে অবশ্যই এক গ্লাস হলুদের দুধ পান করুন।
বাদাম : বিছানায় যাওয়ার আগে কিছু বাদাম ভিজিয়ে রাখুন। পরের দিন ঘুম থেকে ওঠার পর খেয়ে নিন। এগুলো স্বাস্থ্যকর চর্বি। শরীরের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করবে।