ঢাকা ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সুসংবাদ প্রতিদিন

কুমিল্লায় ব্রি ধান ৯৮-এর বাম্পার ফলন

কুমিল্লায় ব্রি ধান ৯৮-এর বাম্পার ফলন

কুমিল্লার দেবিদ্বারে আনন্দ উৎসবের মধ্যদিয়ে কৃষকরা আউশ মৌসুমের নতুন জাত ব্রি ধান-৯৮ কাটা শুরু করেছেন। বিঘাপ্রতি ফলন পাচ্ছে ১৮ থেকে ২০ মণ। চলতি বছর এ ধানের বাম্পার ফলনে খুশি উপজেলার কৃষকরা। কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর পরীক্ষামূলকভাবে ১০৫০ হেক্টর জমিতে ব্রি ধান-৯৮ জাতের চারা রোপণ করেন চাষিরা। অথচ গত কয়েক মাস আগেও কৃষকরা এ জাতের ধান সম্পর্কে জানতেন না। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা আউশ মৌসুম শুরুর পূর্বে কৃষকদের ব্রি ধান-৯৮ চাষে উদ্বুদ্ধ করতে শুরু করেন। পরে বিএডিসি বীজ ডিলারদের মাধ্যমে বিভিন্ন বাজারে বীজের প্রাপ্যতা নিশ্চিতও করেন তারা। স্থানীয় কৃষি উপ-সহকারীর পরামর্শ ও সহযোগিতায় কৃষকরা ব্রি ধান-৯৮ বীজ কিনে বীজতলা তৈরি শুরু করে। বর্তমানে মৌসুম শেষে কৃষকের ঘরে ধান ঘরে উঠতে শুরু করেছে। অপরদিকে, আউশ মৌসুমের প্রচলিত জনপ্রিয় জাত ব্রি ধান-৪৮ এর ফলন পাওয়া যাচ্ছে বিঘা প্রতি সর্বোচ্চ ১৪ থেকে ১৫ মণ। গত বছর উপজেলার তিনটি গ্রামে মাত্র ২ হেক্টর জমিতে ব্রি ধান-৯৮ এর পরীক্ষামূলক চাষ শুরু করা হয়। ব্রি ধান-৯৮ সবচেষে বেশি চাষ হয়েছে উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নে। গ্রামের কৃষক গোলাম মোস্তফা, আব্দুস সামাদ, আবুল কালাম প্রথমবারের মতো চাষ করেছেন ব্রি ধান-৯৮ জাতটি। প্রচলিত সকল জাতের থেকে ফলনের বেশি ও আকার আকৃতিতে চিকন হওয়ায় বেশ খুঁশি তারা। ধান চিকন হওয়ায় দামেও সুবিধা পাওয়া যাবে বলে জানান তারা। ব্রি ধান-৪৮ এর চেয়ে অন্তত মণ প্রতি ধানের মান ভেদে ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেশি পাওয়া যাবে। মোহনপুর ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মো. সুলতান আহম্মেদ বলেন, এর আগে মোহনপুর ইউনিয়নে ব্রি ধান ৯৮ চাষ হয়নি। মৌসুমের শুরুতে আউশ ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির কার্যক্রমের অংশ হিসাবে জাতটি নিয়ে কাজ শুরু করি আমরা। মোহনপুর ইউনিয়নে আউশের জমি বৃদ্ধির সুযোগ নেই, তাই জাত পরিবর্তনের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধিতে মনোযোগ দিয়েছি। প্রথম দিকে প্রচণ্ড খরা আর তাপদাহে কৃষকরা কিছুটা হতাশ ছিলেন, তবে সেচের ব্যবস্থা হতেই ধানের বৃদ্ধিতে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। এখন ফলন দেখে কৃষক বেশ খুশি। কৃষি অফিসার কৃষিবিদ বানিন রায় বলেন, ২০২১ সাল থেকে ব্রি ধান-৯৮ জাতটি সম্পর্কে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। জাত পরিবর্তনের মাধ্যমে আউশের ফলন ও উৎপাদন বৃদ্ধির পরিকল্পনার অংশ হিসাবে দেবিদ্বার উপজেলায় যোগদানের পরই কাজ শুরু করি। প্রচন্ড তাপদাহ উপেক্ষা করে উপ-সহকারী কৃষি অফিসারবৃন্দ মাঠ পর্যায়ে কাজ করেছেন। নতুন করে ২৩৭ হেক্টর জমি আউশের আওতায় এসেছে। তবে শুধু জাত পরিবর্তন বিবেচনায় নিয়ে ব্রি ধান-৪৮ এর তুলনায় বিঘা প্রতি ৩ মণ অতিরিক্ত ফলন হিসেবে এ বছর দেবিদ্বার উপজেলায় ব্রি ধান-৯৮ সম্প্রসারণের ফলে প্রায় ৯৪১ মেট্রিক টন অতিরিক্ত ধান উৎপাদন হবে, যার বাজার মূল্য ১১০০ টাকা মণ প্রতি হিসাবে ২ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। আগামীতে ব্রি ধান-৯৮ আউশ মৌসুমের মেগা ভ্যারাইটি হতে যাচ্ছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত