নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন দিনাজপুর পৌর মেয়র

দেশের সর্বোচ্চ আদালতের তলব আদেশে হাজিরা দিয়েছেন দিনাজপুর পৌর মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম। একইসঙ্গে বিচারক ও বিচারাধীন বিষয় নিয়ে বিরূপ মন্তব্যের জন্য আদালতে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন মেয়র। আপিল বিভাগ এ বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ১২ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন।

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ গতকাল এ আদেশ দেন। গত ৩ আগস্ট বিএনপি ঘোষিত এক কর্মসূচি পালনকালে বক্তব্য রাখেন পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। বক্তব্যে ওই মেয়র বেগম খালেদা জিয়ার মামলায় হাইকোর্টে রায়দানকারী বিচারপতিকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন। পাশাপাশি মেয়র বিচারের রায় নিয়েও অবমাননাকর মন্তব্য করেন। মেয়রের এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হয়। বিষয়টি নজরে আসায় তা আবেদন আকারে আপিল বিভাগে নিয়ে যান অ্যাডভোকেট মাহফুজুর রহমান রোমানসহ সুপ্রিমকোর্টের চার আইনজীবী। তারা আবেদনে বলেন, মেয়রের এই বক্তব্য আদালত অবমাননাকর।

গত ১৭ আগস্ট আবেদনটি শুনানির জন্য উত্থাপন করেন সিনিয়র আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক। তিনি বলেন, এভাবে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি ও মামলার রায় নিয়ে মন্তব্য ধৃষ্টতা ছাড়া কিছুই নয়। এটা বিবেচনায় নেয়া উচিত।

অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেন, মেয়রের বক্তব্যে কোর্টের ইমেজ ক্ষুণ্ণ হয়েছে। রায় বিষয়ে আপিলের সুযোগ রয়েছে। তাই বলে এভাবে বিরূপ মন্তব্য করা যায় না। যদি এ ধরনের ধৃষ্টতার বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা না নেয়া হয়, তাহলে কোর্টের প্রতি জনমনে আস্থার ঘাটতি দেখা দেবে।

মেয়রের আইনজীবী মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, পাবলিক মিটিংয়ে তিনি এই বক্তব্য রেখেছেন। তিনি তার বক্তব্য সম্পর্কে জ্ঞাত। তিনি এটা কনটেস্ট করতে চান না। বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। শুনানি শেষে ১৭ আগস্ট আপিল বিভাগ মেয়রকে তলবের নির্দেশ দিয়ে আজ হাজির হতে বলেন। একইসঙ্গে বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে অপসারণ করতে বিটিআরসি চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন।

ওই তলব আদেশ অনুযায়ী গতকাল সকাল ৯টায় সশরীরে আপিল বিভাগে হাজির হন মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। সকাল সোয়া ৯টায় আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে মেয়রের আইনজীবী মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, মেয়র তার বক্তব্যের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটা উদ্দেশ্যমূলক ছিল না। আপিল বিভাগবিষয়টি শুনানির জন্য ১২ অক্টোবর দিনধার্য করে দেয়। মেয়র জাহাঙ্গীর রাজশাহী বিভাগীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক।