বীরগঞ্জে কঙ্কাল চুরির সময় পাঁচ যুবক গ্রেপ্তার

প্রকাশ : ২৯ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি

দিনাজপুরের বীরগঞ্জে করস্থান থেকে মৃত ব্যক্তির কঙ্কাল চুরির সময় পাঁচ যুবক গ্রেপ্তার করেছে বীরগঞ্জ থানা পুলিশ। গত রোববার দিবাগত রাতে তাদের বীরগঞ্জ চৌধুরীহাট বালাপুকুর কবরস্থান থেকে কঙ্কাল চুরির সময় গ্রেপ্তার করা হয়। এই ঘটনায় বীরগঞ্জ থানায় গতকাল দুপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- শেরপুর জেলার নকলা থানার নারায়নখোলা বাজার আদর্শ গ্রাম টাংইগালাইলা পাড়ার মৃত হাফিজ উদ্দিনের ছেলে মো. লালচাঁন (৩০) বাবর হোসেনের ছেলে আব্দুস সোবাহান সফু (২৮) সাবেদ আলীর ছেলে মো. ফরিদ হোসেন শেখ ফরিদ (২৪) ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ থানার আলিনগর গ্রামের ওসমান গনির ছেলে মো. সেরাজুর ইসলাম ওরফে সিরাজুল ইসলাম (২৭) ও সদর উপজেলার অষ্টধর গ্রামের তামিজ উদ্দিন অরফে আজিজুল ইসলামের ছেলে মো. দেলোয়ার হোসেন বাবু (২৫)। প্রেস ব্রিফিং এ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বীরগঞ্জ সার্কেল) খোদাদাদ সুমন জানান, গত কয়েক দিন ধরে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ, ঘোড়াঘাট, ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ ও পঞ্চগড় জেলায় একের পর এক গোরস্থানের কবর থেকে কঙ্কাল চুরি হয়ে যাচ্ছিল। এ নিয়ে এলাকার মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ ঘটনাগুলো অবগত হওয়ার পর কঙ্কাল চোরদের গ্রেপ্তারের জন্য কাজ শুরু করে। এলাকার প্রতিটি কবরস্থানে নজরদারি বাড়ানো হয়। জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ এক হয়ে কঙ্কাল চোরদের শনাক্ত করার জন্য মাঠে কাজ শুরু করেন। গত রোববার দিবাগত রাতে বীরগঞ্জ উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের চৌধুরীহাট বালাপুকুর কবরস্থানে এলাকাবাসী পাঁচজন যুবককে কবরস্থানে প্রবেশ করতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। রাত সাড়ে ১১টার সময় পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে কঙ্কাল চুরির সময় উপরোক্ত পাঁচ যুবককে গ্রেপ্তার করে। প্রেস ব্রিফিং এ তিনি আরো জানান, পাঁচজন আসামির মধ্যে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনজন আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। আসামিদের বিকালে দিনাজপুর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। ব্রিফিং এ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বীরগঞ্জ সার্কেল) খোদাদাদ সুমন জানান কঙ্কালগুলো তারা চুরি করে ঢাকা ও রংপুরে বিশেষ ব্যক্তির কাছে বিক্রি করেন। তবে এই কঙ্কালগুলো ঠিক কি কাজে ব্যবহার করা হয় পুলিশ এখন তা নিশ্চিত হতে পারেনি। এ ঘটনায় আরও কয়েকজন আসামি পলাতক রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্তে আরো নতুন নতুন তথ্য পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, কঙ্কাল চুরির সঙ্গে জড়িতরা জানান তারা সাধারণত রাস্তার ধারের কবরস্থানগুলোর পুরাতন কবর থেকে কঙ্কাল চুরি করে। একেকটি কঙ্কাল তারা ৭ থেকে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। ঘটনাস্থল থেকে নতুন ট্রাউজার, টি-শার্ট, গামছা, মোবাইল, সিম কার্ড, সাদা পলেথিন জব্দ করা হয়েছে। প্রেস ব্রিফিং এ উপস্থিত ছিলেন বীরগঞ্জ থানার ওসি মো. আব্দুর রাজ্জাক, ১০ নং মোহনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. শাহিনুর রহমান চৌধুরী শাহীন, তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. মইনুল ইসলাম প্রমুখ। প্রসঙ্গত: বীরগঞ্জ উপজেলার তুলসিপুর, চৌধুরীহাট বালাপুকুর, লাটেরহাট, ঘোড়াঘাটের কেন্দ্রীয় কবরস্থান এবং ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় জেলার বিভিন্ন কবরস্থান থেকে কবর খুঁড়ে লাশ চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে এই চক্রটি।