ভাজি হোক কিংবা মাছের ঝোল আলু ছাড়া যেন বাঙালির রান্না অসম্পূর্ণ। যে কোনো তরকারির সঙ্গে অনায়াসে মিশে যায় সবজিটি। বাড়ায় স্বাদও। তাই রান্নাঘরে পেঁয়াজ, রসুনের মতো সবসময়ই আলুর দেখা মেলে। অনেক সময় বাড়িতে কয়েক দিন আলু রেখে দেওয়ার পর এতে হালকা সবুজ রঙের ছোপ দেখা যায়। এই ছোপ বা দাগ নিয়ে অনেকে চিন্তায় থাকেন। সবুজ ছোপযুক্ত আলু কি খাওয়া যাবে? নাকি এটি বিষাক্ত? সাধারণত আলু যখন আলোর সংস্পর্শে আসে, তখন ক্লোরোফিল তৈরি করে। ক্লোরোফিল এমন একটি রঞ্জক যা সবুজ রং সৃষ্টি করে। এমনিতে এটি সম্পূর্ণ নিরীহ। আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় থাকা অনেক খাবারেই এই উপাদানটি রয়েছে। তবে এটি বিষের উপস্থিতির সংকেত দিতে পারে। সবুজ আলুতে থাকা সোলানিন নামের বিষাক্ত উপাদানের সঙ্গে মিশে এটি স্বাস্থ্যহানিকর পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। তাই চিকিৎসকরা মনে করেন হালকা সবুজ রঙের ছোপ থাকা আলু না খাওয়াই ভালো। আলুর গায়ে রোদ এসে পড়লে এর মধ্যে ক্লোরোফিল তৈরি হতে শুরু করে। যত দিনে সেই ক্লোরোফিল দেখতে পাওয়া যায়, ততদিনে আলুর মধ্যে সোলানিন তৈরি হতে শুরু করে। মূলত, কীটপতঙ্গ বা অন্যান্য জীবাণুর থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য আলুতে এই রাসায়নিকটি তৈরি হয়। এটি মানুষের শরীরেও বিষক্রিয়ার সৃষ্টি করতে পারে। অনেকে আলুর এই হালকা সবুজ রঙের অংশটি কেটে ফেলে বাকিটা খান। এতে কী সমাধান মিলবে? না। চিকিৎসকরা বলছেন এতে আদতে কোনো লাভই হয় না। কেন না, ততক্ষণে সোলানিন পুরো আলুতেই ছড়িয়ে পড়ে। সবুজ দাগযুক্ত আলু খেলে কী সমস্যা হতে পারে? সোলানিন উপাদানটি অতিরিক্ত মাত্রায় শরীরে প্রবেশ করলে সাধারণত পেটের সমস্যা শুরু হয়। যেসব আলুতে খুব বেশি মাত্রায় সোলানিন থাকে সেগুলো বমি বমি ভাব, বমিও কারণ হতে পারে। যাদের ওজন বেশি তাদের খুব একটা সমস্যা না হলেও যাদের ওজন কম, তাদের ক্ষেত্রে এই সোলানিন মারাত্মক সমস্যার কারণ হতে পারে। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে সোলানিন যুক্ত সবুজ ছোপ ধরা আলু বড়সড় বিপদ ডেকে আনতে পারে।