সাইবার নিরাপত্তা আইন

পাসের আগে অংশীজনদের মতামত নেয়া হবে

- আইনমন্ত্রী

প্রকাশ : ৩০ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

‘সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩’ এর খসড়া চূড়ান্তের আগেই অংশীজনদের মতামত নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সামনে এ কথা বলেন আইনমন্ত্রী। এর আগে গত সোমবার সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

আইনমন্ত্রী বলেন, সেপ্টেম্বর মাসের ৩ তারিখে সংসদ ডাকা হয়েছে। আইনটি যাতে সংসদে যেতে পারে, সেজন্য আইনটির বিষয়ে গত সোমবার মন্ত্রিসভার চূড়ান্ত অনুমোদন নেয়া হয়েছে। সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে অংশীজনদের ডেকে আলোচনা করা হবে। এছাড়া আগের মামলা আগের আইনে নিষ্পত্তির কথা সাইবার নিরাপত্তা আইনে বলা হয়েছে। তবে সরকার আগের মামলায় নতুন আইনের কম শাস্তি নিশ্চিতের চিন্তা-ভাবনা করছে।

মন্ত্রী বলেন, ব্যাপারটা হচ্ছে আমাদের সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদে পরিষ্কারভাবে লেখা আছে, প্রথম কথা হচ্ছে অপরাধ করার সময় যে আইন বলবৎ ছিল সে আইনেই বিচারকার্য হবে এবং সেই আইনে যে সাজা ছিল সেই সাজাই দিতে হবে। ৩৫ অনুচ্ছেদে একটা কথা আছে সেটা হচ্ছে, যদি নতুন আইন যেটা করা হচ্ছে ওইটার পরিবর্তে সেখানে যদি সাজা অধিক হয় তাহলে সে সাজাটা দেয়া যাবে না। পুরোনো আইনে অর্থাৎ যে আইনে সে অপরাধ করেছে অথবা যে আইন বলবৎ ছিল অপরাধ করার সময়, সেই আইনে যে সাজা আছে, তাকে সেই সাজাই দিতে হবে। দ্বিতীয়টা হচ্ছে কোনো ভিন্নতর সাজা দেওয়া যাবে না। এখানে আমরা অনেক চিন্তা-ভাবনা করেছি। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আমরা যদি ২১ ধারা ধরি। এ ধারায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ১০ বছর সাজা। এখানে নতুন আইনে অর্থাৎ সাইবার নিরাপত্তা আইনে বলা হচ্ছে পাঁচ বছর। তাহলে আদালত যখন এ আইন পাস হওয়ার আগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বলবৎ থাকার সময় যে অপরাধ হয়েছে, তাহলে তিনি সংবিধান মতে এ ১০ বছর সাজা কিন্তু দিতে পারেন। আমরা সেখানে যাতে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হয়, এমন একটা ব্যবস্থা করতে চাচ্ছি। আইনমন্ত্রী বলেন, সাজা কমাতে যাতে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হয়। সে কমানো সাজার মধ্যেই যাতে তারা থাকেন সেরকম একটা ব্যবস্থার চিন্তাভাবনা করছি এবং সেজন্যই আমি কিন্তু এখন বললাম এটা পাস হওয়ার পরই আপনারা বুঝবেন এটার কি রূপ আমি দিচ্ছি।

তিনি আরো বলেন, আইসিটি (তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি) বিভাগ যে ১০ দিন সময় দিয়েছিল সেই ১০ দিন সময়ের মধ্যে যে এসব অবজেকশনগুলো আছে সেসব বক্তব্য গুলো একসঙ্গে জড়ো করে আমরা সবকিছুই স্ট্যান্ডিং কমিটির কাছে উপস্থাপন করব। যারা এখানে তাদের বক্তব্য জানাতে চাচ্ছেন তাদের স্ট্যান্ডিং কমিটির সামনে গতবারের মতো বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ আমরা করে দেব। নোবেলজয়ীরা ইউনুসের পক্ষে ও তার মামলার বিষয়ে চিঠি দিয়েছে-এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, এখানে একটি কথা, ড. ইউনূসের মামলার ব্যপারে কোনো বক্তব্য দিতে চাই না। তার কারণ হলো এ মামলাটা বিচারাধীন। এ মামলার বিষয়ে যতদূর আমি জানি যে লেবার কোর্টে ট্রায়াল হচ্ছে। তিনি যখন আদালতে, যে বিচারিক আদালত যেটা, সে আদালতে যখন জামিন চেয়েছেন তখন জামিন পেয়েছেন। আমি এটাও জানি তিনি যখন তাকে আদালতে উপস্থিত থাকার জন্য তাকে এক্সজেমশন দেওয়ার জন্য বলেছেন সেটাও পেয়েছি। তিনি বলেন, মামলাটা যে কারণে করা হয়েছে বা যারা বাদি তাদেরও মামলা করার অধিকার রয়েছে। মামলার জায়গায় আমি এর থেকে বেশি কিছু বলতে পারব না। কিন্তু আমি একটা কথা বলব যেটা আমি আগে বলেছি, আবারও বলছি, বাংলাদেশের বিচার বিভাগ স্বাধীন, কোনো অন্যায় বা অপরাধ সাধারণ মানুষ করলে তার বিচার হবে। কিন্তু মানুষরা করলে তার বিচার হবে না কেন? এ যে সাংস্কৃতি সৃষ্টি করা যায় না। তারেক রহমানের বক্তব্যের যে রুল শুনানি সেখানে আমরা দেখেছি, যে আইনজীবীদের হট্টগোল। বিচারকদেরও এজলাস থেকে বের হয়ে যেতে হয়েছে। আইনমন্ত্রী হিসেবে বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখছেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি সব পক্ষের কাছে আবেদন করি যে, আদালতের মর্যাদা যেন কেউ হানি না করে। বাংলাদেশ যতদিন থাকবে আদালত থাকবে। আমরা আইনজীবীরা সবাই অফিসার অব দ্য কোর্ট। আমি তাদের কাছে আহ্বান জানাব, রাজনীতির কারণে আদালতকে কলুষিত করাটা ঠিক হবে না। কারণ, তাদের ধৈর্য ধারণ করা উচিত।