ঢাকা ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সুসংবাদ প্রতিদিন

টাঙ্গাইলে পাটের বাম্পার ফলন

টাঙ্গাইলে পাটের বাম্পার ফলন

চলতি মৌসুমে জেলায় পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। দাম ভালো পাওয়ায় লাভবান হচ্ছেন পাট চাষিরা। তবে সোনালি আঁশ ও রুপালি কাঠি বিক্রি করে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। গ্রামাঞ্চলে ইতিমধ্যে পাটকাটাসহ অন্যান্য প্রক্রিয়ায় চলছে মহাযজ্ঞ। পাটের আশানুরূপ ফলন ও রোগবালাই কম হওয়ায় এবার অধিক লাভের আশা করছে পাট চাষিরা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত বছর পাটের ভালো দাম পাওয়ায় কৃষক এ বছর পাট চাষের দিকে বেশি ঝুঁকেছেন। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও মাটি চাষের উপযুক্ত হওয়ায় পাট চাষে সফল হয়েছেন চাষিরা। জেলার ১২টি উপজেলায় এ বছর পাটের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৮ হাজার ৫০ হেক্টর, যা থেকে অর্জিত হয়েছে ১৯ হাজার ২০ হেক্টর। পাট বেশি উৎপাদিত হয়েছে ৯৭০ হেক্টর জমিতে, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে বেশি পাট চাষ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এ বছর প্রায় ২ লাখ ৮ হাজার বেল। সরেজমিন দেখা গেছে, জেলার টাঙ্গাইল সদর, দেলদুয়ার, নাগরপুর, বাসাইল, সখীপুর ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে জমি থেকে পাটকাটার কার্যক্রম। চাষিরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউ ব্যস্ত জমি থেকে পাট কাটায়, কেউবা ব্যস্ত পানিতে জাগ দেওয়ায়, আবার কেউ কেউ পাট ধৌত করতে, কেউবা আবার ব্যস্ত পাট থেকে আঁশ ছাড়াতে। সব মিলিয়ে এখন গ্রামাঞ্চলে চলছে পাটের মহাযজ্ঞ। ফলন ভালো হওয়ায় খুশি চাষিরা। বাজারে পাটের দাম বেশি থাকায় চাষিরা এবার অধিক লাভের আশা করছেন। পাটের আশ বিক্রি করে যেমন কৃষক টাকা পায়। তেমনি পাটকাঠি জ্বালানি হিসেবে, ঘরের বেড়া দেয়ার কাজে ব্যবহার করা হয়। ধীরে ধীরে আবার সোনালি আঁশের রাজত্ব ফিরে আসছে এ জেলায়। জেলার দেলদুয়ার উপজেলার দেউলী ইউনিয়নের আগদেউলী গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, এ বছর আমি ৫ বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছি। শুরুর দিকে পানি না থাকায় পাট জাগ দেয়া খুব কষ্ট হয়েছিল। কিন্তু এখন পানি আসায় পাট জাগ দেয়া সহজ হয়েছে। আমি এখন পর্যন্ত কিছু বাজপাট বিক্রি করেছি ৩ হাজার টাকা মণ দরে। এখন দাম কিছুটা ভালো। আর ১০ থেকে ১৫ দিন পর আমার পাটগুলো বিক্রির উপযোগী হবে। এ রকম দাম থাকলে আমি লাভবান হব। দেলদুয়ার উপজেলার সিলিমপুর বাজারের পাট ব্যবসায়ী মোছাব্বির হোসেন জানান, আমরা স্থানীয় কৃষকের কাছ থেকে পাট কিনে বাংলাদেশের বিভিন্ন মিল পার্টির কাছে বিক্রি করি। এ বছর ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৭০০ টাকা মণ দরে পাট কিনছি। মণে ৫০-৬০ টাকা দরে লাভ করে বিভিন্ন মিল পার্টির কাছে বিক্রি করি। আমাদের এই বাজারে প্রতি শুক্রবার হাট বসে। প্রতি হাটে প্রায় ১ হাজার মণ পাট ক্রয়-বিক্রয় করা হয়ে থাকে। টাঙ্গাইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আহসানুল বাশার বলেন, জেলায় চলতি মৌসুমে পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। দাম ভালো পাওয়ায় লাভবান হচ্ছেন পাট চাষিরা। পাট আবাদের সময় আমরা দেখি দেশীয় জাতের পাটের থেকে ভারতের পাটের বীজের প্রতি কৃষকের চাহিদা বেশি থাকে। বিজেআরআই-৮ যেটা রবি-১ নামে পরিচিত। আমরা এবছর রবি-১ জাতের বীজ বেশি সরবরাহ করেছি। দেশীয় পাটের মধ্যে এ জাতটি সবচেয়ে ভালো। এই জাতটি এবার প্রণোদনা মাধ্যমে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। আমরা কৃষকদের পাট চাষে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তিগত ভাবে সহযোগিতা দিয়ে জেলায় পাটের আবাদ বৃদ্ধি করার চেষ্টা করছি। পাটের বাজারমূল্য বেশি থাকায় পাট চাষে কৃষক দিন দিন আগ্রহ হচ্ছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পাট চাষিদের সাথে থেকে পাট আবাদ বৃদ্ধির কাজ করে যাচ্ছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত