কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়াস্থ ৬ নম্বর ঘাটে নোঙর করা একটি ট্রলারে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনায় ১২ জেলে অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। এর মধ্যে আশঙ্কাজনকাবস্থায় ১০ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, দগ্ধদের ৯ জনের শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় এ ঘটনা ঘটে। অগ্নিদগ্ধ জেলেদের মধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো ১০ জন হলেন, আইয়ুব (৩১), দীল মোহাম্মদ (৩০), রফিক (২৫), মনির (২৬), শফিকুল (২৬), আরমান (২০), রহিম (৩৭), রহিমুল্লাহ (৩০), শাহিন (৩৫), ওসমান (১৯)। কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি ২ জেলে হলেন, আলী আকবর (৫০) ও দুলাল মাঝি (৪৭)। আহত সকলেই মো. সেলিমের মালিকানাধীন দুলাল মাঝির ফিশিং ট্রলারের জেলে এবং কক্সবাজার শহরের ১নং ওয়ার্ডস্থ কুতুবদিয়া পাড়া ও সমিতি পাড়ার বাসিন্দা। কক্সবাজার সদর থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ঘাটে নোঙর করানো অবস্থায় ফিশিং ট্রলারটির ভেতরে থাকা সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ১২ জন জেলে গুরুতরভাবে অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। আহতদের কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে আনা হলে ১০ জনকে চট্টগ্রাম পাঠানো হয়। অপর দুইজন কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রাথমিক অবস্থায় সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কারণ নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। কক্সবাজার সদর হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আশিকুর রহমান বলেন, দগ্ধ ১২ জনের মধ্যে ১০ জনের শরীর ৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আর ৩০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া দুইজনকে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বিস্ফোরণ হওয়া ট্রলার এফবি লাকির সাবমাঝি মুহাম্মদ কামাল বলেন, সাগরে ৯ দিন থাকার পর মাছ নিয়ে ট্রলারটি গত বৃহস্পতিবার বিকালে শহরের ৬নং ঘাট এলাকায় নোঙর করে। পরে যার যার মতো চলে যায়। গতকাল সকালে মাঝি মাল্লারা ট্রলারে কয়েকজন ঘুমাচ্ছিল। আমি আর দুইজন ট্রলার সামনের অংশে কাজ করছিলাম। এমন সময় দুয়েকজন জেলে গ্যাসের চুলোয় চা বানাচ্ছিলেন। হঠাৎ করে বিকট শব্দ শুনে সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। তিনি বলেন, ট্রলারে মোট ১৮ জন ছিলাম। তন্মধ্যে ১২ জন দগ্ধ হয়েছে। কামাল জানান, ট্রলারে ৪টি গ্যাস সিলিন্ডার ছিল। ৪টি বিস্ফোরণ হয়েছে। চট্টগ্রাম মেডিকেলের ৩৬ নম্বর বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারী ওয়ার্ডের সহকারী রেজিস্ট্রার রাশেদ উল করিম জানান, কক্সবাজারে মাছ ধরার ট্রলারে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আহত ১০ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে দুইজনের শরীর ৯০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে, তিনজন ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ। বাকিরা ২০ থেকে ৩০ শতাংশ। তবে ১০ জনের মধ্যে ৯ জনের শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। ডাক্তাররা বলছেন, ১০ জনের অবস্থাই আশঙ্কাজনক।