ঢাকা ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ঢাকা-নারিতা রুটের বিমান চলাচল শুরু

জলকামান থেকে পানি ছিটিয়ে অভ্যর্থনা

জলকামান থেকে পানি ছিটিয়ে অভ্যর্থনা

দীর্ঘ ১৭ বছর পর নারিতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ট্যাক্সিওয়েতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ড্রিমলাইনার বোয়িং-৭৮৭ গাঙচিলের অবতরণ করার সময় জল কামান দিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হয়। গতকাল শনিবার সকাল ৯টায় (স্থানীয় সময়) ঢাকা-নারিতা রুটের বিমানের প্রথম ফ্লাইট বিজি ০৩৭৬ পৌঁছালে জাতীয় পতাকাবাহী বিমানটি টোকিও থেকে ৬০ কিলোমিটার পূর্বে বিমানবন্দরে জলকামানের অভ্যর্থনা দেয়া হয়। জলকামান অভ্যর্থনা হলো এভিয়েশন সেক্টরের একটি ঐতিহ্যবাহী শিষ্টাচার যেখানে বিমানবন্দরগুলো নতুন এয়ারলাইন্সকে সম্মান দেখানোর জন্য উভয় পাশ থেকে জলকামান দিয়ে জলের স্পাউটিং বিমানটিকে ধুয়ে দিয়ে যে কোনো নতুন এয়ারলাইন্সকে তার ট্যাক্সিওয়েতে স্বাগত জানায়। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী এম মাহবুব আলীর নেতৃত্বে বিমানের প্রতিনিধি দলকে বিমানবন্দরের লাউঞ্জে স্বাগত জানান নারিতা বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা। লাউঞ্জে এক স্বাগত অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন যে, জাপানের সঙ্গে বিমানের সরাসরি সংযোগ বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে বাণিজ্য, পর্যটন ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের নতুন দ্বার উন্মোচন করবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক টোকিও সফরে দুই বন্ধু প্রতীম দেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে কৌশলগত অংশীদারিত্বে উন্নীত করার পাশাপাশি সরাসরি বিমান যোগাযোগ বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে সম্পর্ককে মূল্য দেবে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘নতুন ফ্লাইটটি বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরো জোরদার করবে কারণ সরাসরি সংযোগ দুই দেশের মধ্যে জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বাড়াবে।

তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, নতুন ফ্লাইটটি বাংলাদেশ-জাপান দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যকে আরো বাড়াবে এবং জাপানি পর্যটকদের বাংলাদেশের আকর্ষণীয় পর্যটন স্পটগুলোতে আকৃষ্ট করবে।

মাহবুব বাংলাদেশি নাগরিকদের পাশাপাশি নেপাল, ভুটান এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির যাত্রীদের আকর্ষণ করতে নতুন রুটটিকে লাভজনক করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বিমান বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং সিইও শফিউল আজিম বলেন, নেপাল ও কলকাতার যাত্রীদের আকৃষ্ট করতে বিমান এরইমধ্যে নারিতা রুটে ব্যাগেজের বেশি ওজনসহ লোভনীয় প্যাকেজ অফার করেছে। বিমানপ্রধান বলেন, জাতীয় পতাকাবাহী সংস্থা কোড শেয়ারিং এর মাধ্যমে জাপান হয়ে অন্যান্য বাহকের সহায়তায় অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূল এবং কানাডায় যাত্রী নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে। আজিম বলেন, ‘আমরা অন্যান্য এয়ারলাইন্স ইন্টারলিঙ্কিং বা কোড শেয়ারিংয়ের সঙ্গে অনুসন্ধান করছি যাতে আমরা আমাদের যাত্রীদের জাপানের বাইরে ৩৬০ ডিগ্রি এয়ারলাইন্সের মতো বিভিন্ন রুট অফার করতে পারি।’ তিনি বলেন, বর্তমানে বিমান কোড শেয়ারিংয়ের জন্য জাপান এয়ারলাইন্স লিমিটেড (জেএএল), অল নিপ্পন এয়ারওয়েজ এবং এয়ার কানাডার সাথে কাজ করছে। কোড শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে বিমান চারটি গন্তব্য-লস অ্যাঙ্গেলস, ভ্যাঙ্কুভার, সিডনি এবং সিউলে পৌঁছানোর কাজ করছে। কোড শেয়ারিং হলো একটি বিপণন ব্যবস্থা যেখানে একটি এয়ারলাইন্স অন্য এয়ারলাইন্স দ্বারা পরিচালিত একটি ফ্লাইটে তার মনোনীত কোড রাখে এবং সেই ফ্লাইটের টিকিট বিক্রি করে। সারা বিশ্বে এয়ারলাইন্সগুলো তাদের বাজারে উপস্থিতি এবং প্রতিযোগিতামূলক ক্ষমতাকে শক্তিশালী বা প্রসারিত করতে কোড-শেয়ার ব্যবস্থা তৈরি করে চলেছে। প্রবাসী বাংলাদেশী ছাড়াও প্রায় ৪১ হাজার ভারতীয় এবং ১ লাখ ৪০ হাজার নেপালি নাগরিক জাপানে বসবাস করছেন। জাপানের বিচার মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী ২০২২ সাল পর্যন্ত জাপানে ২০, ৯৫৪ জন বাংলাদেশি বসবাস করছেন। ড্রিমলাইনার ৭৮৭-৮ এবং ৭৮৭-৯ এয়ারক্রাফট দিয়ে বিমান সাপ্তাহিক তিনটি ফ্লাইট পরিচালনা করবে।

ঢাকা থেকে প্রতি শুক্র, সোম ও বুধবার এবং নারিতা থেকে প্রতি শনি, মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার ফ্লাইট ছাড়বে। বর্তমানে জাতীয় পতাকাবাহী সংস্থা এয়ারবাসের সঙ্গে আলোচনা করছে ইউরোপীয় বিমান প্রস্তুতকারকের কাছ থেকে ১০টি ব্র্যান্ড নতুন বিমান কেনার জন্য। বর্তমানে বিমানের বহরে মোট ২১টি উড়োজাহাজ রয়েছে। এর মধ্যে চারটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর, চারটি বোয়িং ৭৮৭-৮, দুটি বোয়িং ৭৮৭-৯, ছয়টি বোয়িং ৭৩৭ এবং পাঁচটি ড্যাশ ৮-৪০০ বিমান।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত