আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার মৌসুম শুরুর আগেই দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলায় ফুলকপির চাষ শুরু হয়েছে। এখন ক্ষেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক। কেউ নিড়ানি দিচ্ছেন, কেউ কীটনাশক ছিটাচ্ছেন, কেউ বা সেচ দিচ্ছেন। অনেকে নতুন করে শীতকালীন সবজির চারা রোপণেও ব্যস্ত। ফুলবাড়ী উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের রাজারামপুর গ্রামের নদীপাড়ের কৃষক সাহেব বাবু এবার ৯৯ শতাংশ জমিতে ফুলকপির চারা রোপণ করেছেন। তিনি জানান, আমডুঙ্গি হাটের পাশের জমিতে ফুলকপি চাষ করছেন। ৯৯ শতাংশ জমিতে এখন সার ও নিড়ানি দিচ্ছেন সাতজন মজুর। গ্রামে সাধারণত এই সময়ে কৃষি শ্রমিকদের কাজ থাকে না। আগাম কপি চাষ করায় কৃষি শ্রমিকদের কর্মসংস্থান হয়েছে। পাশাপাশি তিনিও লাভের আশা করছেন। সাহেব বাবু বলেন, ফুলকপি ৬০ দিনের ফসল। ২০ হাজার চারা রোপণ করেছি। ফলন পাওয়া পর্যন্ত জমি চাষ, সার, কীটনাশক, নিড়ানি শ্রমিকের মুজরিসহ খরচ হবে ২ লাখ টাকা। একটি কপি ২০ টাকা করে বিক্রি করলে ২০ হাজার কপি ৪ লাখ টাকায় বিক্রি হবে। আশা করছি, খরচ বাদ দিয়ে ২ লাখ টাকা লাভ হবে। উপজেলার পাটকপাড়া বাজার গ্রামের আরেক কৃষক শরিফউদ্দিন ৩ বিঘা জমিতে ফুলকপি আর ১০ কাঠা জমিতে বেগুন, পটল, ঝিঙা, বরবটি লাগিয়েছেন। তিনি বলেন, এবার আবহাওয়া ভালো। কোনো না কোনো রবি ফসলে লাভ আসবেই। উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, এরই মধ্যে শিম, বাঁধাকপি, ফুলকপি ঝিঙা, বেগুন, মুলাসহ বেশকিছু শীতের আগাম সবজি বাজারে উঠেছে। অন্য বছরের তুলনায় এসব সবজির দাম বেশি। ভালো দাম পাওয়ায় শীতকালীন সবজি চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের। আবার আবহাওয়াও কৃষকের অনুকূলে। ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ওপর দিয়ে ছোট-বড় তিনটি নদী প্রবাহিত। নদী এলাকায় ব্যাপক পলি জমি রয়েছে, যা সবজি চাষের উপযোগী। ফুলবাড়ী উপজেলায় সবজি চাষের উপযোগী ৪৯০ হেক্টর জমি রয়েছে, যার মধ্যে চলতি খরিপ-২ মৌসুমে ৫৫ হেক্টর জমিতে ফুলকপি চাষ হচ্ছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. শাহানুর আলম বলেন, সবজি আগাম উঠাতে পারলে লাভ বেশি। এবার বৃষ্টি কম হওয়ায় সবজি আগে চাষ সম্ভব হয়েছে। সাধারণত কার্তিক মাসে শীতকালীন সবজি চাষ শুরু হয়। এ মৌসুমে উপজেলায় ১ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।