ছাত্রলীগের দুই কেন্দ্রীয় নেতাকে মারধরের ঘটনায় বিতর্কিত অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) হারুনকে রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। একই ঘটনায় এডিসি সানজিদা আফরিনকে রংপুর পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে (পিটিসি) বদলি করা হতে পারে বলে সংবাদ প্রকাশ হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও ছেয়ে গেছে এমন খবরে। তবে বিষয়টিকে গুজব বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে এক সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান। এডিসি হারুন ও সানজিদা- দুজনকেই রংপুর রেঞ্জে বদলির আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘না, না, এটা গুজব।’ মন্ত্রী বলেন, ‘হারুন সম্পর্কে আমাদের তাৎক্ষণিকভাবে যেটা করার, সেটা করেছি। এখন তার বিরুদ্ধে মামলা হবে, তার বিরুদ্ধে তদন্ত হবে। সবগুলোই তো একটা প্রক্রিয়া। তাৎক্ষণিকভাবে যেটার দরকার ছিল, আমরা তাকে সাসপেন্ড করেছি। এখন তদন্ত শুরু হয়ে তার নামে যদি মামলা হয়ে থাকে, সে মামলাগুলোর প্রক্রিয়া শুরু হবে।’ সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে যিনি ভিক্টিম তিনি এখনো মামলা করেননি। মামলা করলে তদন্ত শুরু হবে। আর যেহেতু ঘটনা একটা ঘটেছে, এটার বিভাগীয় মামলা তো হবেই। সেখানে যা সিদ্ধান্ত হয় সেটা হবে।’ এ ঘটনায় সরকার বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিব্রত কি না- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘মানুষ মাত্রই ভুল করে থাকে। যে ভুল করে তার শাস্তি হয়, এটাই স্বাভাবিক। আমাদের সরকার, সে যেই হোক, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। অপরাধ করলে শাস্তি তাকে পেতেই হবে, এটা হলো মূলকথা।’
গত ৯ সেপ্টেম্বর রাতে শাহবাগ থানায় ছাত্রলীগ নেতাদের নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে এডিসি হারুনের বিরুদ্ধে।
আহত নেতারা হলেন- ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন নাঈম, বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান। এর জেরে ওই দিন রাতেই শাহবাগ থানার সামনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ভিড় করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও পুলিশ কর্মকর্তারা থানায় গিয়ে মধ্যরাতে মীমাংসা করেন। তবে ঘটনাটি আলোচনার জন্ম দেয়।
এরপর ১০ সেপ্টেম্বর এডিসি হারুনকে সাময়িক বরখাস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ-১ শাখা থেকে।
এ অবস্থায় ১২ সেপ্টেম্বর বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেন সানজিদা। তিনি দাবি করেন, রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) আজিজুল হক মামুনই এডিসি হারুনকে আগে মারধর করেছেন। সানজিদা রাষ্ট্রপতির এপিএস আজিজুল হক মামুনের স্ত্রী। তিনি ৩৩তম বিসিএসের কর্মকর্তা। ডিএমপির ক্রাইম বিভাগে অতিরিক্ত উপকমিশনার হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন সানজিদা।