ফুসফুস মানব শরীরের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। এর সাহায্যেই শরীরে পৌঁছায় অক্সিজেন। আর এই অঙ্গের সাহায্যেই অক্সিজেন মিশে যায় রক্তে। অন্যদিকে শরীর থেকে ক্ষতিকারক কার্বন ডাই অক্সাইড বের করে দেয় ফুসফুস। আর এই গুরুত্বপূর্ণ কাজ ফুসফুস বিরামহীনভাবে করে চলে। শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ বিশ্রাম পেলেও ফুসফুস কিন্তু তা পায় না। তবে জীবনযাত্রা কিংবা ভুল কিছু অভ্যাসের কারণে ফুসফুসে সমস্যা তৈরি হয়ে যায়। বর্তমানে ফুসফুসের বিভিন্ন ব্যাধিতে আক্রান্তের সংখ্যা বিশ্বজুড়েই বাড়ছে। এর অন্যতম কারণ হলো ধূমপান, পরোক্ষ ধূমপান ও বায়ু দূষণ। এসব ক্ষেত্রে ফুসফুসে জমতে থাকে ময়লা। ফলে শ্বাসকষ্টের পাশাপাশি সিওপিডি বা অ্যাজমার সমস্যা বাড়ে। এছাড়া সর্দি-কাশি তো আছেই। বিভিন্ন গবেষণা বলছে, নিয়মিত ফুসফুসে টক্সিন পৌঁছে গেলে ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। এ বিষয়ে ভারতের নারায়াণা হাসপাতালের বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ রাখি চট্টোপাধ্যায় জানান, ফুসফুস পরিষ্কার রাখতে অবশ্যই ধূমপান বাদ দিতে হবে। এর পাশাপাশি ডায়েটে এমন কিছু খাবার রাখতে হবে যা প্রাকৃতিকভাবে লাং ক্লিঞ্জার হিসেবে কাজ করে। জেনে নিন তেমনই ৫ খাবার সম্পর্কে-
শাক: ডায়েটে নিয়মিত শাক রাখা জরুরি। বিভিন্ন ধরনের শাকে থাকেছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এছাড়া দেখা গেছে, শাকে থাকা ফ্ল্যাভানয়েডস ফুসফুসের কোষের সমস্যা আটকাতে পারে।
লাল-হলুদ রঙের সবজি: এই পুষ্টিবিদের মতে, ফুসফুস ভালো রাখতে লাল রঙের সবজির বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে পাতে রাখতে পারেন বিটরুট, মিষ্টি আলু, টমেটো কিংবা গাজর। এ ধরনের সবজিতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও বিটা ক্যারোটিন। যা ফুসফুসের জন্য উপকারী। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কমিয়ে দেয় ফুসফুসের উপরের চাপ। হলুদও ফুসফুসের জন্য খুবই ভালো। এতে থাকা পুষ্টিগুণ শরীরের নানা ভিটামিন ও খনিজের অভাব পূরণ করে। দেখা গেছে, হলুদ নিয়মিত খেলে অনেক ক্ষেত্রেই বহু সমস্যা মিটে যায়। এক্ষেত্রে হলুদের মধ্যে থাকা কারকিউমিন হলো একটি বিশেষ ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা পুরো শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের যত্নের পাশাপাশি ফুসফুসও সুস্থ রাখে।
খাবারে রসুন ও আদা ব্যবহার: খাবারের স্বাদ বাড়াতে রসুন ও আদা ব্যবহার করা হয়। তবে জানলে অবাক হবেন, এই দুটি ভেষজ উপাদান শুধু মশলা হিসেবেই নয় বরং ফুসফুসসহ সামগ্রিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেয়। এসব উপাদানেও আছে ভরপুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা শরীর ভালো রাখতে সাহায্য করে।
গ্রিন টি: গ্রিন টির স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে সবারই কমবেশি ধারণা আছে। অতিরিক্ত ওজন কমানো থেকে শুরু করে শরীরে জমে থাকা টক্সিন বের করে দিতে দারুণ কার্যকরী এক প্রাকৃতিক উপাদান হলো গ্রিন টি। সবুজ চায়ে থাকে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, যা ফুসফুস ভালো রাখে। এক্ষেত্রে মিউকাস বা কফ ফুসফুসে তৈরি হতে বাঁধা দেয় এই পানীয়। এছাড়া দেখা গেছে, সিওপিডি রোগীর ক্ষেত্রেও দারুণ উপকারী এই সবুজ চা।