কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিবিএল) কর্তৃক চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক) বরাবরে মাতারবাড়ী গভীরসমুদ্র বন্দর চ্যানেল হস্তান্তর করা হয়েছে। গত বুধবার চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর চ্যানেল আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেন সিপিজিসিবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ। বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল ওই চ্যানেল চবকের পক্ষে গ্রহণ করেন। চবক কর্তৃক এই চ্যানেল গ্রহণের ফলে এখন থেকে চ্যানেলের ব্যবহার, সংরক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ পরিপূর্ণভাবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের উপর ন্যস্ত থাকবে। এ চ্যানেলের মাধ্যামে আগত সমুদ্রগামী জাহাজের পোর্ট ডিউজ, বার্থ হায়ার চার্জ, পাইলটিং, টাগ চার্জ, বার্থিং আনবার্থিং ও অন্যান্য চার্জ চবক কর্তৃক আদায় করা হবে। এতে প্রচুর বৈদেশি মুদ্রা আদায় হবে, যা দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখবে।
সরকারের অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিপিজিসিবিএল কর্তৃক মাতারবাড়িতে দুটি ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের আওতায় ১৪ দশমিক ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ২৫০ মিটার প্রস্থ’, ১৮ দশমিক ৫ মিটার (এমএসএল) গভীরতার একটি চ্যানেল খনন করা হয়। পরে মাতারবাড়ী বন্দর নির্মাণের জন্য ২০১৮ সালের ২৯ নভেম্বর নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী চ্যানেলের প্রশস্ততা ১০০ মিটার বর্ধিত করে ৩৫০ মিটারে উন্নীত করা হয়। নির্মিত চ্যানেল ও হারবার নিরাপদ ও সুরক্ষিত করার জন্য সিপিজিসিবিএল কর্তৃক ১ হাজার ৭৫৩ মিটার উত্তর ব্রেকওয়াটার, ৭১৩ মিটার দক্ষিণ ব্রেকওয়াটার এবং উত্তর দিকে ১৮০২ দশমিক ৮৫ মিটার রিভেটমেন্ট নির্মাণ করা হয়। গত বছরের ১৬ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের সভাপতিত্বে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের চ্যানেল হস্তান্তর বিষয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভার সিদ্ধান্তের আলোকে মাতারবাড়ী চ্যানেলটি সিপিজিসিবিএল কর্তৃক চবক’র নিকট হস্তান্তর করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, বিশেষ অতিথি ছিলেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফা কামাল ও বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. হাবিবুর রহমান। এছাড়া চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার, চবক সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক-১, মহাপরিচালক (প্রশাসন), পুলিশ কমিশনার, কাস্টমস কমিশনার, জেলা প্রশাসকসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, চবক’র বিভাগীয় প্রধানসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।