‘প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছেন- দুই হাত ভরে দেবেন। যাতে আমার জনগণ বুঝতে পারে যে, শেখ হাসিনার সরকার তাদের পাশে আছে।’ গতকাল শনিবার দুপুরে মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন দুর্যোগব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান। এর আগে কৃষি মার্কেটটির ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন তিনি। এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও শ্রমিকের আশ্বস্ত করে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছেন- দুই হাত ভরে দেবেন। যাতে আমার জনগণ পরে বুঝতে পারে যে শেখ হাসিনা তাদের পাশে আছে, শেখ হাসিনার সরকার তাদের পাশে আছে। (প্রধানমন্ত্রী) ফোন করে এই ডায়ালগটা দিয়েছেন। কাজেই আপনারা হতাশ হবেন না। কোনো কষ্ট পাবেন না। আমরা আপনাদের পাশে আছি। শেখ হাসিনা আপনাদের পাশে আছে।
তিনি বলেন, ২৫ বছরের অধিক সময়ে পরিচালিত হয়ে আসছিল এই মার্কেট। সব শ্রেণির মানুষ স্বল্প দামে এই মার্কেটে পণ্য কিনতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী শুনে অত্যন্ত ব্যথিত হয়েছেন। তিনি আমাকে বলেছেন, যত দ্রুত সম্ভব মার্কেট চালু করতে। চালু না হওয়া পর্যন্ত খাবারের ব্যবস্থা করা হবে। ১৫ দিন হলে ১৫ দিন, ১ মাস হলে ১ মাস খাবার দেব মালিক এবং শ্রমিকদের জন্য।
ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা ১ হাজার বান্ডিল টিন এবং ১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেব। কালকের মধ্যে চলে আসবে। আপনারা দ্রুত কাজ করেন। এ সময় তিনি উপস্থিত দুর্যোগব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ডিজিকে নির্দেশ দেন জিও (আদেশ) দেওয়ার জন্য। এখানে কোনো রকমের ঢিলেমি করা যাবে না। কারো জায়গায় যেন কেউ না পায়, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ যেন বঞ্চিত না হয়, সে বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। এনামুর রহমান আরো বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায়, দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে পুনর্বাসন করায় বাংলাদেশ এখন সারা বিশ্বের রোল মডেল হয়েছে। ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি বজলুর রহমান বলেন, আগুনে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আবার কীভাবে করা তার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। সিটি করপোরেশনকে এই দায়িত্ব নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী আমাদের পাশে আছেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য সাদেক খান বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত মার্কেট এবং ব্যবসায়ীদের কষ্ট প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। তিনি নিয়মিত খোঁজখবর রাখছেন। আমাদের দাবি অনুযায়ী টিনশেড করে দিয়ে দ্রুত ব্যবসায় বসতে দিতে হবে। দুর্যোগব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, আমরা তাৎক্ষণিকভাবে কিছু শুকনা খাবার দিয়েছি। আজকে ব্যবসায়ীরা নিঃস্ব হয়ে গেছেন। এটার ভালো একটা সমাধান সরকারের পক্ষ থেকে পাবেন। স্থানীয় কাউন্সিলর ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সলিমুল্লাহ সলু বলেন, আমাদের যে মার্কেট ছিল, আমরা সেভাবেই চাই। আমরা বহুতল ভবন চাই না। যার যতটুকু জায়গা, তার ততটুকু দোকান দিন দেন। ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা সর্বশান্ত হয়ে গেছি। বলার মতো ভাষা নেই। অনাহারে-অর্ধাহারে দিন পার করছি।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর ভোর রাতে রাজধানীর অন্যতম এই মার্কেট আগুনে পুড়ে যায়। এতে কয়েকশ’ ব্যবসায়ী-শ্রমিক ও কর্মচারী ক্ষতিগ্রস্ত হন।