ঢলের পানিতে নদীভাঙন

কুড়িগ্রামে হুমকিতে শতাধিক পরিবার

প্রকাশ : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

গত কয়েকদিন ধরে ভারি বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও তিস্তায় দেখা দিয়েছে ভাঙন। জেলার রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙা ইউনিয়ন ও উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নে নদীর তীব্র ভাঙনে ১০টি বসতভিটাসহ শতাধিক বিঘা আবাদি জমি বিলীন হয়েছে নদীগর্ভে। এছাড়া হুমকিতে রয়েছে কমিউনিটি ক্লিনিক, বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ভূমি অফিসসহ বসতি ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। বসতভিটা হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছে এসব নদীপাড়ের মানুষ। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের খুদিরকুটি ব্যাপারিপাড়া ও মোগলবাসা ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর সিতাইঝাড় গ্রামে ধরলার তীব্র ভাঙনে গত দুই দিনে শত শত বিঘা জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ওই এলাকার আব্দুস সাত্তার, জোবেদ আলী, আ. করিম বাদশা, লুৎফর মুন্সি, দেওয়ান আলী, মোহাম্মদ আলী ও রোস্তমের বসতভিটা ও আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। হুমকিতে আছে আরো শতাধিক পরিবার ও স্থাপনা। সিতাই ঝাড় গ্রামের ভিটেমাটিহারা জোবেদ আলী বলেন, গত রাতে আমার বাড়িঘর নদীভাঙনে বিলীন হয়েছে। হঠাৎ ভাঙন শুরু হওয়ায় দিশাহারা হয়ে পড়েছি। নিজের জমিজমা না থাকায় কোথায় ঠাঁই নেব জানি না। আপাতত পরিবার-পরিজন নিয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে উঠেছি। আল্লাহ জানে কপালে কি আছে। ভাঙনের শিকার আরেক দিনমজুর সামেদ আলী বলেন, ‘চারটা ঘরের চাল সরে নিয়া স্কুল মাঠত থুচি। ভিটার অর্ধেক গেইছে। যে স্রোত পড়ছে নগদ বাকিকোনাও যায়! একজনের কাছত ঘর তুলি থাকার জন্য জমি চাছি। না দিলে কোটেই থাকমো সে উপায় নাই।’ বেগম গঞ্জ ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম বলেন, গত কয়েক দিন ধরে ভাঙন চলছে। ৪নং ওয়ার্ডের স্কুলসংলগ্ন ২৯টি পরিবার বসতভিটা হারিয়েছে। ভাঙনের তীব্রতা বেড়েই চলছে। কিন্তু পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনের কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক ২ হাজার বস্তা জিও ব্যাগ ফেলার অনুমতি দিয়েছে আগামী মঙ্গলবার থেকে জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, রাজারহাট ঘড়িয়ালডাঙা ইউনিয়ন, উলিপুর বেগমগঞ্জ ও সদর উপজেলার মোগলাবাসা ধরলার বাম তীরে প্রায় ৩ কিলোমিটার অংশজুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতো বড় অংশে জরুরি প্রতিরক্ষা কাজ করার বরাদ্দ নেই। আমরা তাৎক্ষণিক ২-৩ হাজার জিও ব্যাগ সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছি। স্কুল, কমিউনিটি ক্লিনিকসহ স্থাপনাগুলো রক্ষায় আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।