বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষ
মৌসুমের প্রথম জাহাজে ৫১৭ পর্যটকের সেন্টমার্টিন গমন
প্রকাশ : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার
পর্যটন মৌসুমে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে প্রথম জাহাজ এফবি বারো আউলিয়ায় করে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন ভ্রমণে গেলেন ৫১৭ জন পর্যটক।
গতকাল সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে টেকনাফের দমদমিয়া জেটি ঘাট থেকে ৫১৭ জন পর্যটক নিয়ে যাত্রা করে জাহাজটি। পরে বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে জাহাজটি দ্বীপে পৌঁছায়। পরে আড়াই শতাধিক পযটক দ্বীপে রাত্রিযাপনের জন্য সেখানে অবস্থান করছেন। একই দিন বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে সেন্টমাটিন থেকে জাহাজটি টেকনাফের উদ্দেশে রওয়ানা হয়েছেন। এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী।
সি-ক্রোজ অপারেটর অনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’র সাধারণ সম্পাদক হোসাইনুল ইসলাম বাহাদুর বলেন, গতকাল সকাল থেকে টেকনাফ দমদমিয়াস্থলে ‘বার আউলিয়া’ পর্যটকবাহী জাহাজ জেটি ঘাটে ভিড় করেন ভ্রমণে আসা পর্যটকরা। এ সময় কোস্ট গার্ড, নৌ-পুলিশসহ বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তারা তদারকির দায়িত্ব পালন করেন। এরপর নিরাপদে ৫১৭ জন পর্যটক নিয়ে মাত্র ২ ঘণ্টার মধ্যে সেন্টমার্টিন পৌঁছায় জাহাজটি। এ সময় তাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পর্যটন ব্যবসায়ী ও দ্বীপের বাসিন্দারা। এরপর বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে পুনরায় জাহাজটি টেকনাফের উদ্দেশে সেন্টমার্টিন ছেড়ে আসে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা নয়ন শীল বলেন, ‘কোনো জাহাজ যাতে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করতে না পারে, সেজন্য আমরা তদারকি করছি। প্রথম দিনে ৫১৭ জন যাত্রী নিয়ে ‘বারো আউলিয়া’ জাহাজ সেন্টমার্টিন রওনা করে। এ জাহাজে ৮৫০ যাত্রী ধারণক্ষমতা আছে।
সেন্টমার্টিন ভ্রমণে যাওয়া পর্যটক আমির বলেন, ‘দ্বিতীয় বারের মতো প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে ঘুরতে এসেছি, খুব আনন্দ লাগছে। আমাদের দলে ২০ জন সদস্য রয়েছে।
ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক মামুনুর হাসান বলেন, ‘পরিবারের ১১ সদস্যকে নিয়ে সময় কাটানোর পাশাপাশি সমুদ্রস্নানের জন্য সেন্টমার্টিনে যাচ্ছি। আশা করি ভ্রমণ আনন্দদায়ক হবে।’
কুমিল্লা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক আবদুল হামিদ বলেন, পরিবারের পাঁচজন সদস্য নিয়ে কক্সবাজার বেড়াতে আসি। সেখানে জানতে পারলাম আজ থেকে এক সপ্তাহের জন্য জাহাজে করে সেন্টমার্টিন যাওযা যাবে। তাই দেরি না করে টিকিট সংগ্রহ করে সেন্টমাটিন বেড়াতে যাচ্ছি। সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, আজ সেন্টমার্টিন দ্বীপের মানুষের মনে ঈদের আনন্দ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
পর্যটন মৌসুমের শুরুর দিন টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে জাহাজ চলাচল শুরু হওয়াই দ্বীপে এ উৎসব আমেজ লেগেছে। অধিকাংশ হোটেল-মোটেল ও কটেজে সাজ সাজ রব। এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আদনানা চৌধুরী জানান, গতকাল সকালে ওই পর্যটকবাহী জাহাজে করে ৫০০-এর বেশি ভ্রমণকারী সেন্টমার্টিন দ্বীপে রওনা দিয়েছেন। কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে এ জাহাজগুলো চলাচল শুরু করেছে। পর্যটকদের যাতে কোনো সমস্যা না হয়, সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে। সাগর উত্তাল হওয়ার পাশাপাশি কালবৈশাখি ঝড়ের আশঙ্কায় দুর্ঘটনা এড়াতে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে জাহাজ চলাচল শুরু হয় চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি।
পরে ১৮ মার্চ থেকে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এ পথে জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দেয়। ওই সময় টেকনাফ-সেন্টমার্টিন থেকে কেয়ারি সিন্দবাদ, কেয়ারি ক্রুজ অ্যান্ড ডাইন, আটলান্টিক, শহীদ আব্দুস সালাম, এমভি পারিজাত, এমভি রাজ হংস, সুকান্ত বাবু, এমভি বে ক্রুজ এবং এমভি বার আউলিয়া জাহাজ চলাচল করত।