বাঙালির সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলার বাতিঘর, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে উদযাপিত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার শেখ হাসিনার জন্মদিনটি উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপন করেছে আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠন এবং বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকালে ঢাকাসহ সারা দেশে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে আলোচনা সভা, রক্তদান কর্মসূচি, বৃক্ষরোপণ, কেক কাটা, বস্ত্র বিতরণ, খাদ্য বিতরণ, আনন্দ র্যালি ও শোভাযাত্রা বের করা হয়। জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌর ও ইউনিয়ন পর্যায়েও একই কর্মসূচি উদযাপিত হয়। ১৯৪৭ সালের এই দিনে তিনি গোপালগঞ্জের মধুমতি নদী বিধৌত টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। শেখ হাসিনা স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছার জ্যেষ্ঠ কন্যা। বর্তমানে তিনি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদান উপলক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন।
এদিকে ঈদে মিলাদুন্নবী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে আওয়ামী লীগ। এতে অংশ নেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, মতিয়া চৌধুরী, আব্দুর রহমান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনসহ কেন্দ্রীয় ও আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনাসহ আগামী জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সফলতা কামনা করে দোয়া করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষ্যে সুপ্রিমকোর্টের দক্ষিণ হলে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ এক আলোচনা সভার আয়োজন করে। সভায় আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন। বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ইউসুফ হোসেন হুমায়ুনের সভাপতিত্বে ও সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক আব্দুন নূর দুলালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নজিবুল্লাহ হিরু, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মমতাজ উদ্দিন ফকির, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এসএম মনির প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষ্যে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল, গান, কবিতা পাঠ ও বিশেষ প্রার্থনা সভার আয়োজন করে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট। সংগঠনের সভাপতি ও কণ্ঠশিল্পী রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে ও জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার বাদ জোহর বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মো. মিজানুর রহমান। মোনাজাতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারি ও সাধারণ মুসল্লিরা উপস্থিত ছিলেন।
একইসঙ্গে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় মেরুল বাড্ডাস্থ বৌদ্ধ মন্দিরে বৌদ্ধ সম্প্রদায়, সকাল ৯টায় খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (সিএবি) মিরপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চে (৩/৭/এ সেনপাড়া, পর্বতা, মিরপুর-১০) এবং সকাল ১১টায় ঢাকেশ্বরী মন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায় বিশেষ প্রার্থনা সভার আয়োজন করে। এসব কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনে সুবিধাবঞ্চিত পথশিশুদের নিয়ে কেক কাটলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ সুবিধাবঞ্চিত পথশিশুদের নিয়ে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালায় ‘স্মার্ট চিলড্রেন কার্নিভাল’ এ কেক কাটা ও বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে আইসিটি সচিব মো. সামসুল আরেফিন, বিসিসি নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রবক্তা স্বপ্নদর্শী নেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব গ্রহণের পর থেকে দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে দলকে সুসংগঠিত করেন এবং ১৯৯৬ সালে প্রথম, ২০০৮ সালে দ্বিতীয়, ২০১৪ সালে তৃতীয় এবং ২০১৮ সালে চতুর্থবারের মতো নির্বাচনে জয়লাভ করে প্রধানমন্ত্রী হন। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।