কক্সবাজারের রামুতে বনবিভাগের জায়গা দখল করে এনজিওর টাকায় ঘর নির্মাণ কাজে বাঁধা দেয়ায় বনকর্মীদের উপর দখলবাজচক্রের হামলায় ঘটনা নিয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত বুধবার রাতে দারিয়ারদীঘি বিট কর্মকর্তা মো. আরজু মিয়া বাদি হয়ে রামু থানায় এই মামলাটি দায়ের করেন। রামু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবু তাহের দেওয়ান মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। মামলায় ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে আরো শতাধিক অজ্ঞাত নারী-পুরুষকে আসামি করা হয়েছে বলে তিনি জানান। পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু তাহের দেওয়ান আরও বলেন, বনকর্মীদের উপর হামলাকারীদের ধরতে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে। এদিকে এই ঘটনায় আহতদের মধ্যে রাজারকুল সদর বিট কর্মকর্তা জহিরুল আলমের মাথায় মারাত্মক জখম হয়। বৃহস্পতিবার বিকালে চট্টগ্রাম এভারকেয়ার হসপিটালের নিউরো সার্জারি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট অ্যান্ড কো-অর্ডিনেটর ডা. মো. আনিসুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে একটি টিম তার মাথায় সফল অস্ত্রোপচার চালায়। বর্তমানে জহিরুল এভারকেয়ার হসপিটালে আইসিওতে ওই ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছে। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার পর থেকে তিনি স্বাভাবিক কথা বলছেন। তিনি অনেকটা শষ্কামুক্ত বলে দাবি করেছেন কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) আনিসুর রহমান। সূত্র মতে, কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের রাজারকুল রেঞ্জের দারিয়ারদীঘি বিটের কম্বনিয়া এলাকায় বনভূমি জবরদখল করে একটি গ্রুপ ২০টির মতো পাকাঘর নির্মাণের কাজ চালিয়ে আসছিল। গত মঙ্গলবার খবর পেয়ে সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) আনিসুর রহমানের নেতৃত্বে বনকর্মীরা বাধা দেয়। এ সময় ৩ থেকে ৪শ’ জবরদখলকারী লাঠিয়াল বাহিনী বনকর্মীদের আক্রমণ করে। এতে ২৮ জন বনকর্মী আহত হয়। তাদের ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে রামু হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এর মধ্যে অবস্থার অবনতি হলে রাজারকুল সদর বিট কর্মকর্তা জহিরুল আলম ও দারিয়ারদীঘি বিট কর্মকর্তা মো. আরজু মিয়াকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) আনিসুর রহমান বলেন, আহত ২৮ জনের মধ্যে বিট কর্মকর্তা আরজু মিয়া কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আর রাজারকুল বিট কর্মকর্তা জহিরুল আলম চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বৃহস্পতিবার রাতে এভারকেয়ার হসপিটালে নেয়া হয়েছে। কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. সারওয়ার আলম বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। সরকারি জায়গাতে ঘর করা এমনিতেই অপরাধ। আবার বনকর্মীর উপর হামলা চালিয়েছে আরেকটি অপরাধ করেছে দখলবাজচক্র। কোনো এনজিও তাদের অর্থায়ন করেছে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) আনিসুর রহমানের নেতৃত্বে একটি টিম জহিরুল আলমের চিকিৎসা তদারকি করছেন। এদিকে চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন সংরক্ষক বিপুল কৃষ্ণ দাস বিট কর্মকর্তা জহিরুল আলমের চিকিৎসার খোঁজখবর নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।