আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আগামী ৭ অক্টোবর প্রথমবারের মতো মাঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তফসিল ঘোষণার লক্ষ্যে প্রস্তুতি নিয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা হবে ওই বৈঠকে। ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এরই মধ্যে বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এতে তফসিলের প্রস্তুতির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসতে পারে। ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমানের পাঠানো ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনের আওতাধীন মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে (সব আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, সিনিয়র- জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা) আগামী ৭ অক্টোবর, শনিবার বেলা ১১টায় নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সভাকক্ষে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল ওই সভায় সভাপতিত্ব করবেন। এতে অন্য নির্বাচন কমিশনারগণ, ইসি সচিব ও সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার কর্মকর্তারা বলছেন, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তফসিল ঘোষণার লক্ষ্য নিয়ে সব কাজ এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তবে নভেম্বরের প্রথমার্ধেই তফসিল দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ইসির। এতে ভোটগ্রহণ হবে ডিসেম্বরের শেষ থেকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে। বর্তমানে নির্বাচনি উপকরণ ক্রয়, ব্যালট পেপার ছাপানো প্রভৃতির কাজ যেমন হাতে নিয়েছে ইসি, তেমন জোরেশোরে চলছে ভোটার তালিকার সিডি প্রস্তুত, ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ, নির্বাচন ব্যবস্থাপনা অ্যাপ প্রস্তুতকরণের কাজও। এছাড়া শুরু হয়েছে নির্বাচনি প্রশিক্ষণও। ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী, আগামী ২ নভেম্বর সংসদ নির্বাচনের আসন্নভিত্তিক ভোটার তালিকার সিডি চূড়ান্ত করা হবে।
ভোটার তালিকার সিডি মনোনয়নপত্র কেনার সময় প্রার্থীদের দেয় ইসি। কর্মকর্তারা বলছেন, ভোটার তালিকার সিডি প্রস্তুত করার পর তফসিল ঘোষণায় সাধারণত বেশি সময় নেওয়া হয় না। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এবারও তাই হবে। এজন্য ৭ অক্টোবরের বৈঠকে অন্যান্য প্রস্তুতি নিয়ে দিকনির্দেশনা দেবেন ইসি। এছাড়া মাঠ পর্যায়ে কী চ্যালেঞ্জ রয়েছে তাও শুনবেন কর্মকর্তাদের কাছ থেকে। ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, সব প্রস্তুতি যথাযথভাবে এগিয়ে চলছে।
এছাড়া কমিশন যখন যে নির্দেশনা দেবে ইসি সচিবালয় সেভাবেই সব কাজ সম্পন্ন করবে। প্রকাশিত খসড়া তালিকার ওপর যে দাবি-আপত্তি এসেছিল, সেগুলো শুনানি শেষে ভোটকেন্দ্র টিকেছে ৪২ হাজার ১০৩টি। এতে ভোটকক্ষ রয়েছে ২ লাখ ৬০ হাজারের মতো। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ভোটার ছিল ১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৭ জন। সে সময় সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪০ হাজার ৬৫৭টি।
এর মধ্যে যাচাই-বাছাই শেষে ৪০ হাজার ১৮৩টি কেন্দ্র চূড়ান্ত করা হয়। এতে ভোটকক্ষ ছিল ২ লাখ ৭ হাজার ৩১২টি। সবশেষ, ২০২২ সালের হালনাগাদ অনুযায়ী, দেশে ভোটার সংখ্যা ১১ কোটি ৯১ লাখ ৫১ হাজার ৪৪০ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৪লাখ ৪৫ হাজার ৭২৪ জন। আর নারী ভোটার ৫ কোটি ৮৭ লাখ ৪ হাজার ৮৭৯ জন। এছাড়া হিজড়া ভোটার রয়েছেন ৮৩৭ জন। তরুণ ভোটারদের অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ সৃষ্টি করায় এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। তাই এবার ভোটকেন্দ্র ও ভোটকক্ষের সংখ্যা বাড়ছে পাঁচ শতাংশের মতো। এবারের নির্বাচনে প্রায় ১০ লাখ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে।