দেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে আরো ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যু বেড়ে দাঁড়াল ১ হাজার ৪৬ জনে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন দুই হাজার ৫৬৪ জন। গতকাল বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ মো. জাহিদুল ইসলামের স্বাক্ষর করা ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন দুই হাজার ৫৬৪ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৭২০ জন ও ঢাকার বাইরের ১ হাজার ৮৪৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ১৬ জনের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা সাতজন ও ঢাকার বাইরের ৯ জন।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ১৪ হাজার ২৪৭ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৮৫ হাজার ৮৬০ জন। ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন ১ লাখ ২৮ হাজার ৩৮৭ জন।
একই সময়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ২ লাখ ৩ হাজার ৯১৭ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৮২ হাজার ৩৪৬ জন এবং ঢাকার বাইরের ১ লাখ ২১ হাজার ৬৭১ জন।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৯ হাজার ২৮৪ জন ডেঙ্গুরোগী। তাদের মধ্যে ঢাকায় ২ হাজার ৯৪৫ জন এবং ঢাকার বাইরে ৬ হাজার ৩৩৯ জন।
এদিকে দেশে ডেঙ্গু টিকার প্রয়োগ নিয়ে জাতীয় টিকাণ্ডসংক্রান্ত কারিগরি উপদেষ্টা কমিটির (নাইট্যাগ) পরামর্শ চেয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কমিটির সুপারিশ পেলে ভ্যাকসিন প্রয়োগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির। গতকাল বিকালে এডিস সার্ভের ফলাফল নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। আহমেদুল কবির বলেন, সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কিউডেঙ্গা টিকা প্রয়োগে ছাড়পত্র দিয়েছে। তবে বয়সসীমার শর্তও দিয়েছে তারা। কিউডেঙ্গা ভ্যাকসিন নতুন কিছু নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অ্যাডভাইস হলো, এ ভ্যাকসিন দেওয়া যাবে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ছাড়পত্র দিয়েছে বলেই যে এটি আইডিয়াল ভ্যাকসিন, তা কিন্তু বলা যাবে না।
ডেঙ্গু সংক্রমণ কবে কমবে, এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, টেম্পারেচার ডাউন না হলে হয়তো ডেঙ্গু সংক্রমণটা কমবে না। ডেঙ্গু এখন টেম্পারেচারের ওপর নির্ভরশীল। বৃষ্টি না থামলে কমার সম্ভাবনা দেখছি না। ডেঙ্গু সংক্রমণ প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল না হলেও এডিস মশার বংশ বৃদ্ধিটা ঠিকই প্রকৃতির ওপর নির্ভর করছে।