নওগাঁর মহাদেবপুরে বাণিজ্যিকভাবে কদবেল বাগান করে সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে খোরশেদ আলম নামের এক কৃষি উদ্যোক্তা। তিনি একইসঙ্গে ওই বাগানে কমলা চাষ করেও পেয়েছেন অভাবনীয় সাফল্য। জেলায় আম বাগান, লিচু বাগান, কাঁঠাল বাগান, কলা বাগান, কমলা বগান, ড্রাগনফলের বাণিজ্যিক চাষ হলেও কদবেল চাষ বিরল এবং ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। কৃষি উদ্যোক্তা আলহাজ খোরশেদ আলম নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলার এনায়েতপুর ইউনিয়নের হোসেনপুর মৌজায় ৪ বিঘা জমিতে সাড়ে ৩ বছর আগে গড়ে তুলেছেন কদবেল বাগান। উল্লিখিত পরিমাণ জমিতে সাড়ে ৪০০ কদবেল গাছ রোপণ করেন। এ বছর দ্বিতীয়বার ফল ধরেছে গাছে গাছে। উদ্যোক্তা খোরশেদ আলম জানিয়েছেন, এ বছর প্রতিটি গাছে গড়ে ৯০টি করে কদবেল ধরেছে। সেই হিসেবে সাড়ে ৪০০ গাছে এ বছর বাগানে মোট কদবেল রয়েছে ৪০ হাজার ৫০০টি। আর কিছু দিনের মধ্যে এসব বেল বাজারজাত করা সম্ভব হবে। বর্তমান প্রতিটি বেল পাইকারিভাবে গড়ে ২০ টাকা হারে বিক্রি হচ্ছে। সেই হিসেবে পাইকারিভাবেই এই বেল বিক্রি হবে প্রায় ৮ লাখ ১০ হাজার টাকা। কদবেলের পাশাপাশি অন্য ৩ বিঘা জমিতে গড়ে তুলেছেন কমলা বাগান। কমলা বাগানে গাছের সংখ্যা ৩২০টি। এ বছর প্রতিটি গাছে গড়ে এক মণ করে কমলা উৎপাদিত হয়েছে। সেই হিসেবে কমলা উৎপাদিত হবে ৩২০ মণ। সবুজ রঙের কমলাগুলো মিষ্টি এবং সুস্বাদু। বর্তমান বাজার অনুসারে প্রতিকেজি কমলা পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। এই মূল্যে বাগানের কমলা বিক্রি হবে প্রায় ১৫ লাখ টাকারও বেশি। অথচ এই বাগান গড়ে তুলতে মোট খরচ হয়েছে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা। বাগানের বয়স যত বাড়বে, গাছ তত বড় হবে এবং উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে ক্রমাগত। কদবেল আর কমলার এই বাগান দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে উৎসাহী মানুষ বাগানে আসেন। বাগান দেখতে আসা ইউডি সদস্য মো. আজাদুল ইসলাম বলেছেন, এলাকায় বিশেষ করে বাণিজ্যিকভাবে কদবেল বাগান গড়ে তোলার এই উদ্যোগ ব্যাপকভাবে সাড়া ফেলেছে। প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে প্রচুর মানুষ এই কদবেল আর কমলার বাগান দেখতে আসছেন। তাঁরাও ইচ্ছা প্রকাশ করছেন এমন বাগান সৃজন করতে। মহাদেবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হোসেইন মুহাম্মদ এরশাদ বলেন, কদবেল বাগান গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তেমন কোনো ঝক্কি ঝামেলা নেই। তেমন কীটনাশক বা সার ব্যবহারও করতে হয় না। কেবল সামান্য পরিচর্যার কৌশল জানতে হয়। এ ক্ষেত্রে কৃষি বিভাগ সব রকমের সহযোগিতা প্রদান করবে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তা। আরো নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি এবং কদবেলের বাজার সৃষ্টির ক্ষেত্রেও কৃষিবিভাগ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত বলে জানালেন কৃষি কর্মকর্তা।