সিরিয়ার সামরিক একাডেমিতে গত বৃহস্পতিবার ড্রোন হামলায় ১১২ জন নিহত হয়েছেন। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সরকার নিয়ন্ত্রিত হোমসে এই ভয়াবহ হামলার জন্য ‘সন্ত্রাসী সংগঠনকে’ দায়ী করেছে। যুদ্ধ পর্যবেক্ষণ গ্রুপ এ কথা জানিয়েছে।
এদিকে কুর্দি বাহিনী জানায়, দেশটির কুর্দি নিয়ন্ত্রিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলে তুরস্কের বিমান হামলায় কমপক্ষে ১১ জন নিহত হয়েছে। আঙ্কারা বোমা হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দেওয়ার পর তারা সেখানে হামলা চালাল। সরকারি বার্তা সংস্থা ‘সানা’ পরিবেশিত সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়, সন্ত্রাসী সংগঠন কেন্দ্রীয় শহর হোমসে সামরিক একাডেমির কর্মকর্তাদের স্নাতক অনুষ্ঠান লক্ষ্য করে এই হামলা চালায়। ব্রিটেনভিত্তিক মানবাধিকারবিষয়ক পর্যবেক্ষণ সংস্থা জানায়, সেখানে ড্রোন হামলায় ২১ জন বেসামরিক নাগরিকসহ ১১২ জন নিহত ও কমপক্ষে ১২০ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১১ নারী রয়েছে। সিরিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী হাসান আল-ঘোবাশ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে বলেন, এই ঘটনায় প্রাথমিকভাবে ছয় নারী ও ছয় শিশুসহ ৮০ জন নিহত এবং ২৪০ জন আহত হওয়ার কথা জানানো হয়েছিল। কেউ তাৎক্ষণিকভাবে এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। জাতিসংঘ প্রধানের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস সিরিয়ায় ড্রোন এবং প্রতিশোধমূলক হামলার জন্য গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সিরিয়ার মানবাধিকার পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ওই একাডেমির মিলনায়তনে সেনাসদস্যদের সনদ প্রদান অনুষ্ঠান ছিল। দেশটির সেনাবাহিনী ও কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন নেতৃস্থানীয় কর্মকর্তা সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। অনুষ্ঠানটি শেষ হওয়ার আনুমানিক ২০ মিনিটের মধ্যে ড্রোন হামলা হয় সেই একাডেমিতে। একটি সূত্র বলছে, এ হামলায় সিরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী আলী মাহমুদ আব্বাস আহত হয়েছেন। তবে সিরিয়ার একটি নিরাপত্তা সূত্র ও সরকার সমর্থক একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন, তবে হামলার কয়েক মিনিট আগে তিনি চলে যান। বাশার আল আসাদের পদত্যাগের দাবিতে সিরিয়ায় ২০১১ সালে আন্দোলন শুরু হয়েছিল। কিন্তু জনগণের সেই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন দমনে ব্যাপক সহিংসতা চলায় দেশটির সরকারি বাহিনী। সেই সহিংসতার জেরেই জন্ম নেয় একাধিক সশস্ত্র গোষ্ঠী। একপর্যায়ে সরকারি বাহিনী ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়, যা এরই মধ্যে লক্ষাধিক মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। ১২ বছরের গৃহযুদ্ধে সিরিয়ার ভূখণ্ডের কিছু অংশ বিদ্রোহীদের হাতে চলে গেলেও বাশার আল আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করা যায়নি। রাশিয়া ও ইরানের সমর্থন নিয়ে তিনি এখনো দেশটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সূত্র: রয়টার্স ওআল জাজিরা