গ্রেপ্তার ছেলেকে নিয়ে বাবার খণ্ডিত মাথার সন্ধানে পিবিআই
প্রকাশ : ০৮ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রাম ব্যুরো
চট্টগ্রামে নগরীর পতেঙ্গা এলাকায় বাবা হাসানকে (৬১) হত্যা করে টুকরো করার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ছেলে শফিকুর রহমান ওরফে জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ৬ অক্টোবর দিবাগত রাতে রাজধানীর হাজারীবাগ থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঢাকা থেকে শফিককে চট্টগ্রাম নিয়ে আসা হয় গতকাল ভোরেই। এরপর তাকে নিয়ে পতেঙ্গা সাগরপাড়ে যায় পিবিআইয়ের টিম। সেখানে ফেলে দেওয়া হয়েছিল শফিকের বাবার কাটা মাথা। তবে প্রায় ঘণ্টাখানেক খোঁজার পর সন্ধান মেলেনি ভুক্তভোগীর কাটা মাথা। এরপর গতকাল বেলা পৌনে ১১টার দিকে তাকে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তাকে ঘটনা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানান কর্মকর্তারা। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের পরিদর্শক মো. ইলিয়াস খান বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া শফিকের বাসায় বাবাকে হত্যা ও টুকরো টুকরো করা হয়েছিল। এরপর শফিক ও তার স্ত্রী আনারকলি মিলে বাবার কাটা মাথা সাগর পাড়ে ফেলে দিয়েছিল। এর আগে কাটা মাথা উদ্ধারে আমরা শফিকের স্ত্রী আনারকলিকে নিয়ে সেখানে যাই। কিন্তু দুই দিন তল্লাশির পর কাটা মাথাটি পাইনি। এরপর গত শুক্রবার রাতে শফিককে গ্রেপ্তারের পর পুনরায় মাথার সন্ধানে যাই। কিন্তু খোঁজ পাওয়া যায়নি। জানা গেছে, গত ২১ সেপ্টেম্বর পতেঙ্গা থানার ১২ নম্বর ঘাট এলাকায় সড়কের পাশে পড়ে থাকা একটি লাগেজ থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল মানুষের শরীরের আটটি খণ্ড। এর মধ্যে ছিল দুই হাত, দুই পা, কনুই থেকে কাঁধ এবং হাঁটু থেকে উরু পর্যন্ত অংশ। প্রতিটি অংশ টেপ দিয়ে মোড়ানো ছিল। তবে ওই লাগেজে ভুক্তভোগীর মাথা না থাকায় তাৎক্ষণিক পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। এ ঘটনায় পতেঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল কাদির বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।
এর আগে খণ্ডিত এই মরদেহ পরিচয় শনাক্ত ও রহস্য উন্মোচনে মাঠে নামে পিবিআই কর্মকর্তারা। তারা প্রথমে ফিঙ্গারপ্রিন্টের সহায়তায় নিহত ব্যক্তি মো. হাসান বলে শনাক্ত করেন। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী হাসান বাঁশখালীর উপজেলার কাথারিয়া এলাকার সাহেব মিয়ার ছেলে। তার বর্তমান ঠিকানা লেখা আছে সিলেট সদরের সাধুর বাজার সংলগ্ন রেলওয়ে কলোনি এলাকায়।
পিবিআই জানায়, ২৮ বছর ধরে ভুক্তভোগী হাসানের সঙ্গে পরিবারের যোগাযোগ ছিল না। এ সময়ে তিনি কোথায় ছিলেন তাও জানতেন না পরিবারের সদস্যরা। বছরখানেক আগে হঠাৎ তিনি বাড়িতে ফিরে আসেন। বাড়িতে হাসানের নামে কিছু পৈতৃক সম্পত্তি ছিল। যেটি বিক্রি করতে চেয়েছিলেন ভুক্তভোগী হাসান। এ নিয়ে বিরোধের জেরে গত ২০ সেপ্টেম্বর নগরের ইপিজেড থানার আকমল আলী রোডের পকেট গেট এলাকার জমির ভিলা ভবনের একটি বাসায় স্ত্রী-সন্তানরা মিলে হাসানকে হত্যা করে টুকরো টুকরো করে ফেলে।