ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করে এবার সুদিন ফিরেছে চাষিদের। হাওরের এ জনপদে প্রায় ৪০০ বিঘা জমিতে বারি-৮ ও মঙ্গলরাজা জাতের টমেটো এবার চাষ করেছেন কৃষকরা। এ বছর জেলার নাসিরনগর উপজেলা থেকে অন্তত ২০ কোটি টাকার টমেটো বাজারজাত হবে। এতে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। এতে তারা স্বাবলম্বী হয়েছে। কৃষি জমির পাশাপাশি বাড়ির আঙিনাতে করা টমেটো বাগানে কর্মসংস্থান হয়েছে কয়েকশ’ মানুষের। জানা যায়, হাওর বেষ্টিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায় চলতি বছর প্রায় ৪০০ বিঘা জমিতে টমেটোর আবাদ হয়েছে। আবাদ করা টমেটো বাগানগুলোর বেশিরভাগই বাড়ির আঙিনায় করা। ফলন ভালো হওয়ায় লাভবান হচ্ছেন কৃষকরাও। বাগান থেকেই আকার ও মান ভেদে প্রতি কেজি টমেটো পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১১০ টাকা দরে। নাসিরনগর উপজেলার কয়েকটি টমেটো বাগান ঘুরে দেখা যায়, কেউ ঘাস পরিষ্কার করছেন। কেউ আবার ওষুধ ছিটাচ্ছেন। অনেক কৃষক নিজের জমির পাশাপাশি অন্যের জমি বর্গা নিয়েও টমেটোর চাষ করেছেন। উপজেলার পূর্বভাগ ইউনিয়নে গিয়ে দেখা মেলে কৃষক রমিজ মিয়ার (৮৫) সঙ্গে। তিনি তার তিন ছেলেকে নিয়ে জমি থেকে পাকা টমেটো তুলছেন। তিনি জানান, সারা বছর এ জমি পতিত পড়ে থাকত। হঠাৎ করে মাস তিনেক আগে কৃষি অফিসের লোকজন এসে বলল, গ্রীষ্মকালে টমেটোর চাষ করা যায়। পরে তাদের পরামর্শে ৪০ হাজার টাকা খরচ করে জমিতে টমেটোর চারা রোপণ করেন। এখন পর্যন্ত ২ লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করেছেন। গোকর্ণ ইউনিয়নের আরেক কৃষক আবুল হাসেম বলেন, আমি ৬০ শতাংশ পতিত জায়গা মহাজন থেকে বর্গা নিয়ে আগাম জাতের টমেটো চাষ করেছি। আমার খরচ হয়ছে ৫৫ হাজার টাকা। আমি এ পর্যন্ত ৩ লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করতে পেরেছি। এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক সুশান্ত সাহা বলেন, আমরা গ্রীষ্মকালীন সবজি চাষের উদ্যোক্তা তৈরি করছি। বিশেষ করে নাসিরনগরে টমেটা চাষ করার ব্যাপারে। টমেটো ফলন বাড়াতে কৃষকদের নানা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।