চট্টগ্রামে মা-মেয়েকে হত্যার দায়ে যুবকের মৃত্যুদণ্ডাদেশ
প্রকাশ : ১৩ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রাম ব্যুরো
নগরীর সদরঘাট থানাধীন দক্ষিণ নালাপাড়ায় মা-মেয়েকে ছুরিকাঘাতে হত্যা মামলায় বেলাল হোসেন (২৭) নামের এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড ও টিটু সাহা (৪৬) নামের এক আসামিকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল ষষ্ঠ অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ সিরাজাম মুনীরার আদালত এই রায় দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বেলাল হোসেন কুমিল্লার মুরাদনগর থানার কোরবানপুর গ্রামের মন মিয়ার ছেলে। টিটু সাহা একই থানার বাখরাবাদ রঞ্জিত মাস্টার বাড়ির নেপাল সাহা’র এর ছেলে। তিনি পেশায় জুয়েলারি দোকানের কর্মচারী।
মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর দীর্ঘতম বড়ুয়া দীঘু বলেন, ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে বেলাল হোসেনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন। বেলাল যে স্বর্ণ লুট করেছিল তা কিনে নিজের হেফাজতে রাখায় আসামি টিটু সাহাকে ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ৩ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায়ের সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে সাজা পরোয়ানামূলে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আদালত সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণ নালাপাড়ায় মোবাশ্বের মিয়ার ছয় তলা ভবনের চতুর্থ তলায় ভাড়া থাকতেন খাসির মাংস ব্যবসায়ী মো. শাহ আলম। ওই বাসায় শাহ আলম, তার স্ত্রী নাছিমা বেগম (৩৭), মেয়ে রিয়া আক্তার ফাল্গুনী (১০), শাহ আলমের শ্যালক আলাল ও দুই ছেলে থাকতেন। ২০১৫ সালের ৭ মে সকালে শাহ আলম দোকানে চলে যান। সকাল ৯টার দিকে তার দুই ছেলে স্কুলে যায়। তখন ঘরে ছিল নাছিমা ও মেয়ে রিয়া। সকাল পৌনে ১০টার দিকে শাহ আলমকে তার শ্যালক আলাল ফোন করে জানায় নাছিমা ও রিয়া হত্যার শিকার হয়েছে।
শাহ আলম ঘরে গিয়ে স্ত্রী-কন্যাকে মেঝেতে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। ঘরে থাকা ১ লাখ ১১ হাজার টাকা, ৪ ভরি স্বর্ণালংকার ও দুটি মোবাইল ফোন সেট নিয়ে যায় হত্যাকারী। ঘটনার পরপরই পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় শাহ আলম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। ২০১৫ সালের ২৭ মে হত্যাকাণ্ডের দিন হারিয়ে যাওয়া মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে খুনের শিকার নাছিমা বেগমের স্বামী শাহ আলমের খালাতো ভাই বেলাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। নাছিমা বেগমের স্বর্ণালংকার নগরের বাকলিয়া ইসহাকের পুল এলাকায় একটি জুয়েলার্সের কর্মচারী টিটু সাহার কাছে বিক্রি করেছিল বেলাল হোসেন। পরে টিটু সাহাকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ ২০১৫ সালের ২৫ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। ২০১৯ সালের ১৫ জুলাই আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়।