সরকারের বেঁধে দেওয়া প্রতি ডিম ১২ টাকায় বিক্রির ট্রাকসেল (খোলা বাজারে) কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল কারওয়ান বাজারের টিসিবি ভবন চত্বরে এই কার্যক্রম উদ্বোধন করেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান। জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পৃষ্ঠপোষকতায় এ কার্যক্রমে সহায়তা করছে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। ঢাকার ১৬ থেকে ২০টি পয়েন্টে এই কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। দাম আরো কমলে সেই দামে ভোক্তারা ডিম পাবেন বলে জানানো হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ডিমের বাজার ঠিক রাখতে আমরা প্রতিটি গ্রুপের সঙ্গে মিটিং করেছি। অর্থাৎ, ভোক্তা থেকে শুরু করে আমাদের কর্পোরেট গ্রুপ বিশেষ করে যে প্রান্তিক খামারিরা আছেন। সেখানে আসলে একটা সমস্যা আছে। প্রান্তিক খামারিরা এখনো ৮০ শতাংশ ডিম উৎপাদন করেন। কর্পোরেট গ্রুপ তারা এখানে যেটা করেছে, কন্ট্যাক্ট ফার্মিংয়ের মাধ্যমে যেকোনোভাবেই হোক, সারা দেশের ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছিল।
তিনি বলেন, গত বছর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার পর আমরা ধারণা করেছিলাম, এ বছর একটি সিস্টেমে চলবে। কিন্তু দেখা গেল, গত ৬ আগস্টের ১২ টাকার ডিম হঠাৎ করে ৯ আগস্ট ১৫ টাকা হয়ে গেল এবং এ বছরও সেরকম একটি কারসাজির নীলনকশা করা হয়েছিল। এরপর ব্যাপকভাবে আমরা সারা দেশে অভিযান করেছি। তখন আমরা ১২ টাকায় আনতে না পারলেও সাড়ে ১২ টাকায় এনেছিলাম। তখন আমাদের প্রাণীসম্পদমন্ত্রী উৎপাদক পর্যায়ে ১০ টাকা ৫০ পয়সা এবং খুচরা বাজারে ১২ টাকা নির্ধারণ করেন। কিন্তু আমরা সেটি সাড়ে ১২ টাকা পর্যন্ত এনেছিলাম।
এর কারণ হলো, উৎপাদক পর্যায়ে সাড়ে ১০ টাকা আনা সম্ভব হয়নি। তখন সারা দেশে উৎপাদক পর্যায়ে ১১ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ১১ টাকা ৫০ পয়সা পর্যন্ত ডিমের দাম ছিল। তারা বলেছিলেন, খাবারের দাম বৃদ্ধির জন্য এ দাম রাখা হয়। কিন্তু আমাদের গবেষণায় দেখা যায়, তারা বিদেশ থেকে খাবার আমদানিতে খরচ দেখিয়েছিলেন। এরপর আমরা এ বিষয়ে বেশ কয়েকটি মিটিংও করেছি। এটা নিয়ে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ও কাজ করছে।
তিনি আরো বলেন, আসলে প্রান্তিক খামারিদের খাবার থেকে শুরু করে সবকিছু কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে কিনতে হয়। এ কারণেই আসলে তারা পোষাতে পারেন না। এরপর গত বৃহস্পতিবার পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারা সরাসরি খামার থেকে এনে ১২ টাকায় ডিম বিক্রি করবেন। এরই ধারাবাহিকতায় আজকে এই কার্যক্রম আমরা উদ্বোধন করলাম।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান পিএসসি। এছাড়া ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।