সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত ও নির্বিঘ্নে ওমরাহ পালনে এখন থেকে ওমরাহ যাত্রী ও এজেন্সিগুলোকে পাঁচটি নির্দেশনা মানতে হবে। করণীয় এ পাঁচটি বিষয় জানিয়ে ১৫ অক্টোবর ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে সৌদি আরবের জেদ্দার বাংলাদেশ হজ অফিস। চিঠিতে বলা হয়, প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বাংলাদেশি নাগরিক পবিত্র ওমরাহ পালনে সৌদি আরবে আসেন। সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৫ লক্ষাধিক। এত বড়সংখ্যক বাংলাদেশি ওমরাহ পালনে এলেও তাদের আসা-যাওয়া কিংবা ওমরাহ পালন শেষে দেশে ফেরত যাওয়া না যাওয়ার কোনো সঠিক হিসাব বা তথ্য সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা/পদ্ধতি চালু নেই। ফলে কেবল সৌদি আরবে অসুস্থ হলে কিংবা হারিয়ে গেলে অথবা মৃত্যুবরণ করলে তাদের বিষয়টি জেদ্দার বাংলাদেশ হজ অফিসকে অবহিত করা হয়। কোনো ওমরাযাত্রী কোনো প্রকার সমস্যা/বিপদগ্রস্ত হলে সেক্ষেত্রে জেদ্দার হজ অফিসকেই এগিয়ে আসতে হয়। কিন্তু সঠিক তথ্য না থাকায় কাঙ্ক্ষিত সেবা দেওয়া সম্ভব হয় না। ফলে ওমরাহ পালনকারীদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে হলে পাঁচটি বিষয়ের প্রতি গুরুত্বারোপ করতে হবে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
যে পাঁচ নির্দেশনা মানতে হবে ১. বাংলাদেশ থেকে গ্রুপভিত্তিক ওমরাহে আসতে হবে। গ্রুপের সঙ্গে ওমরাহ এজেন্সির অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রতিনিধি/গাইড সৌদি আরবে আগমন করবেন। সৌদি আরবে অবস্থানকালে বিশেষ করে হারাম শরীফে আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে কিংবা কোথাও জিয়ারত/মার্কেট কিংবা অন্য কোথাও গেলে গ্রুপভিত্তিক চলাচল করতে হবে।
২. বর্তমান নিয়মানুযায়ী ওমরাহযাত্রী সৌদি আরবে আসার আগেই তার হোটেল নির্ধারিত হয়ে যায়। ফলে প্রত্যেক ওমরাযাত্রীকে বাংলাদেশের এবং সৌদি আরবের ওমরাহ এজেন্সির নাম, মোবাইল নম্বর, হোটেলের নাম ও ঠিকানাসহ প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সম্বলিত আইডি কার্ড প্রদান করতে হবে এবং তা সঙ্গে রাখার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করতে হবে। কোনোভাবেই আইডি কার্ড ছাড়া বাইরে যাওয়া যাবে না।
৩. ওমরাহ পালনের ক্ষেত্রে সুস্থতাও গুরুত্বপূর্ণ। ওমরা পালনকারীকে অবশ্যই মেডিকেল চেকআপ করাতে হবে।
৪. বয়স্ক কিংবা অসুস্থ ওমরা যাত্রীদের নিজস্ব লোক (স্বামী, সন্তান, ভাই ইত্যাদি) সঙ্গে নিয়ে আসতে হবে।
৫. বাংলাদেশি ওমরাহ এজেন্সির সঙ্গে স্থানীয় সৌদি ওমরাহ কোম্পানির মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী তালিকা জেদ্দার হজ অফিসে পাঠাতে হবে। ওমরাহ পালন এবং স্থানীয় সৌদি নিয়মাবলী সম্পর্কে যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদান করা একান্ত জরুরি। ব্যাগেজে মালামাল বহনের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। সৌদি আইন অনুযায়ী বহন নিষিদ্ধ মালামাল বহন থেকে বিরত থাকতে হবে। পাশাপাশি দেশে ফেরত যাওয়ার সময় মূল্যবান জিনিসপত্র কেনার রশিদ সঙ্গে রাখতে হবে। ৬০ হাজার সৌদি রিয়াল বা এর বেশি নগদ অর্থ, সোনার অলংকার কিংবা অন্য কোনো মূল্যবান জিনিসপত্র থাকলে সৌদি কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে নিয়মানুযায়ী ঘোষণা দিতে হবে। পরিচিত/অপরিচিত কোনো ব্যক্তির মালামাল ভালোভাবে পরীক্ষা না করে বহন করা যাবে না। বাংলাদেশ থেকে যাওয়া ওমরাহ পালনকারীদের সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে নিরাপত্তার সঙ্গে ওমরাহ পালনে এ বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্বারোপ করা একান্ত জরুরি জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, কোনো কোনো ক্ষেত্রে কোনো ওমরাহ পালনকারী বিপদগ্রস্ত হলেও তার কাছে কিংবা এ অফিসে কোনো প্রকার তথ্য না থাকায় জেদ্দার হজ অফিসের কোনো প্রকার সহায়তা করা সম্ভব হয় না। এমতাবস্থায় ওমরাহ পালনেচ্ছুক ব্যক্তিদের ও ওমরাহ পরিচালনাকারী এজেন্সিগুলোকে বিষয়গুলো অবহিত করার ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয় চিঠিতে।