ঢাকা ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সাত দফা বাস্তবায়নের দাবিতে কক্সবাজারে পরিবহণ ধর্মঘট

ভোগান্তির শিকার পর্যটক ও সাধারণ মানুষ
সাত দফা বাস্তবায়নের দাবিতে কক্সবাজারে পরিবহণ ধর্মঘট

কক্সবাজারে পরিবহণ ধর্মঘটের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ ও পর্যটকরা। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ভ্রমণে আসা পর্যটক ও বিপদগ্রস্ত স্থানীয় লেকজন। গতকাল সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পরিবহণ মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা ধর্মঘটের কারণে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল দিনব্যাপী ৭ দফা দাবিতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-টেকনাফ-বান্দরবান সড়ক ও পিএবি বাঁশখালীসহ চট্টগ্রাম দক্ষিণাঞ্চলের তিন জেলা ও উপজেলায় পরিবহণ ধর্মঘট পালনের ডাক দেয় পরিবহণ মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। ফলে সকাল থেকে কক্সবাজারের সঙ্গে চট্টগ্রামসহ আশপাশের দূরপাল্লার যানবাহন বন্ধ হয়ে যায়। হঠাৎ পরিবহণ ধর্মঘটের কারণে কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটক ও চট্টগ্রাম-ঢাকামুখী সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়ে। কক্সবাজার বাস টার্মিনালের বিভিন্ন বাস কাউন্টারে টিকিট না পেয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

কক্সবাজারে বেড়াতে আসা দিনাজপুরের বাসিন্দা জসিম উদ্দিন ও সেলিনা হোসেন জানান, আমরা পরিবহণ ধর্মঘটের কথা জানতাম না। সেন্টমার্টিন থেকে বাসটার্মিনালে এসে জানতে পারলাম পরিবহণ ধর্মঘট চলছে। ওদিকে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা যাওয়ার জন্য আমাদের ট্রেনের টিকিট করা আছে। আজ বিকালের মধ্যে ফিরতে না পারলে টিকিট বাতিল হয়ে যাবে।

ঢাকা থেকে আসা পর্যটক সমির উদ্দিন বলেন, দুই দিন হলো কক্সবাজার বেড়াতে এসেছি। আজ ঢাকায় ফেরার সময়। কিন্তু বাস নেই। ধর্মঘটের কারণে আটকে গেলাম। আমাদের কাছে থাকার বাজেটও শেষ। বাসের টিকিটের জন্য কাউন্টারে সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এছাড়াও স্থানীয় অনেক মানুষ দৈনন্দিন কাজে চট্টগ্রাম যেতে পারছেন না।

কলাতলীর লাইট হাউজের বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী বলেন, আজকে চট্টগ্রামে আমার একটি চাকরির ইন্টারভিউ ছিল। কিন্তু বাস চলাচল না করায়, ইন্টারভিউ দেয়া হলো না।

এদিকে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামে যেতে পারেনি রহিম উল্লাহ। কক্সবাজার আরকান সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়নের প্রচার সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন, ‘আমরা ৭ দফা দাবিতে চট্টগ্রাম, বান্দরবানের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পরিবহণ ধর্মঘট পালন করছি। আমরা আসা করছি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমাদের দাবিগুলো মেনে নিবে। দাবি না মানলে সামনে আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

কক্সবাজার জেলা সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি শেফাতুল আলম বাবু বলেন, সড়ক পরিবহণ আইন বাস্তবায়ন ও সড়কের বিশৃঙ্খলাসহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে চট্টগ্রাম বিভাগের মালিক ও শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সঙ্গে আমরাও সকাল-সন্ধ্যা ধর্মঘট পালন করছি। এটি আমাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি ছিল।

কক্সবাজার কলাতলী মেরিন ড্রাইভ হোটেল রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান জানান, কক্সবাজার ভ্রমণে আসা অধিকাংশ পর্যটক সড়ক পথ ব্যবহার করেন। কিছু পর্যটক আবার বিমানে করেও কক্সবাজার ভ্রমণ করে থাকেন। কিন্তু, আজকে সড়ক পরিবহণ ও শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা ধর্মঘটের কারণে ঢাকা থেকে দিনের বেলায় কোনো পর্যটক আসেনি এবং কক্সবাজার ছেড়ে যায়নি। অনেকে ভ্রমণ শেষে সকালে সড়কপথে যেতে বাস কাউন্টারে গিয়ে আবার হোটেলে ফেরত এসেছে। অনেকে আবার কাউন্টার এবং এদিক-ওদিক ঘুরে সন্ধ্যা পর্যন্ত সময় অতিবাহিত করছে। জরুরি যাদের কক্সবাজার ছাড়তে হচ্ছে, তারা বাড়তি টাকা দিয়ে কার-মাইক্রোবাসে করে চলে যাচ্ছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে পর্যটকরা।

চকরিয়ার চিরিঙ্গা হাইওয়ে থানার ইনচার্জ খোকন কান্তি রুদ্র জানান, পরিবহণ ধর্মঘটের কারণে যাতে কেউ সড়কে বিশৃঙ্খলা করতে না পারে সেজন্য সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হাইওয়ে পুলিশের টিম মাঠে ছিল। সন্ধ্যার পর থেকে স্বাভাবিক যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত