ঢাকা ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

উখিয়ায় সরকারি চাল জব্দের ঘটনা আড়ালের চেষ্টা : মামলা

রাঘববোয়ালদের চিহ্নিত করার দাবি
উখিয়ায় সরকারি চাল জব্দের ঘটনা আড়ালের চেষ্টা : মামলা

কক্সবাজারের উখিয়ার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের রুমখাঁ চৌধুরীপাড়ায় দুস্থ মহিলা সহায়তা (ভিডাব্লিউবি) প্রকল্পের সরকারি ১১১ বস্তায় ৩ হাজার ৩৩০ কেজি চাল জব্দের ঘটনা আড়ালের ঘটনায় অবশেষে মামলা হয়েছে। চাল জব্দের ৩ দিনের মাথায় গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে ১৯৭২ সালের বিশেষ আইনে উখিয়া থানায় মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়। র‌্যাব-১৫ এ কর্মরত এসআই মংকু চাকমা বাদী হয়ে করা মামলায় একজনকে প্রত্যক্ষ এবং চার-পাঁচজনকে পরোক্ষ আসামি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী। উখিয়ার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের রুমা চৌধুরী পাড়ার (৯নং ওয়ার্ড) মোজাহের কোম্পানির ছেলে সিরাজুল ইসলামসহ অজ্ঞাতানামা আরো ৪-৫ জনকে পলাতক আসামি করা হয়েছে। মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, গত রোববার রাতে এসআই রাসেল হোসেনের নেতৃত্বে র‌্যাব-১ নিয়মিত টহলে বের হয়। টহলকালে উখিয়া বাজার এলাকায় অবস্থানকালে গোপন সংবাদে খবর আসে, উখিয়ার হলদিয়া পালং ইউপির রুমকা চৌধুরীপাড়াই মোজাহের কোম্পানির আধাপাকা বসতঘরে সরকারিভাবে ভিজিডি কর্মসূচির বিপুল পরিমাণ চাউল অবৈধ মজুত করা হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্স এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিব ম্যাজিস্ট্রেট উখিয়া সালেহ আহমেদসহ রাত সোয়া ১২টায় ঘটনাস্থলে যাওয়া হয়। মোজাহের কোম্পানির আধাপাকা বসতঘরের সামনে পৌঁছালে র‌্যাবের উপস্থিতি টের মজুতকারিরা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। উপস্থিত লোকজনের সামনে পলাতক আসামির ঘর তল্লাশি করে তার ঘরের বারান্দায় থাকা ১১১ বস্তা মুখ বন্ধ খাদ্য অধিদপ্তরের আতপ চাউল ২৮টি প্লাস্টিকের বস্তা, ৮৩টি চটের বস্তা উদ্ধার হয়। প্রতি বস্তায় ৩০ কেজি করে ১১১ বস্তায় ৩ হাজার ৩৩০ কেজি চাউল উদ্ধার করা হয়।

এসআই রাসেল হোসেন রাত সোয়া ১টার দিকে আলামতের জব্দ তালিকা করে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিব ম্যাজিস্ট্রেট উখিয়ার নির্দেশে জব্দ তালিকা মূলে ভারপ্রাপ্ত খাদ্য পরিদর্শক উখিয়া কক্সবাজারের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়। এজাহার নামীয় আসামি তাহার সহযোগী অজ্ঞাতানামা আসামিদের যোগসাজসে সরকারিভাবে ভিজিডি কর্মসূচির বিপুল পরিমাণ আতপ চাউল অবৈধভাবে সংগ্রহ করত, অধিক মুনাফায় কালো বাজারে বিক্রয়ের উদ্দেশে মজুত করে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন-এর ২৫ ও ২৫-ডি ধারায় অপরাধ করেছে। পলাতক আসামি গ্রেপ্তার, মূল উৎস উদ্ঘাটনের লক্ষ্যে অন্যান্য এলাকায় অভিযান ও ঊর্ধ্বন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে এজাহার দিতে বিলম্ব হয়েছে। মামলাটি তদন্ত দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, উখিয়া থানার এসআই মনোজ কান্তি কুরীকে। অপরদিকে, মামলাটি স্থানীয় থানার অফিসার দিয়ে তদন্ত হলে সরকারি চাল চুরিতে জড়িত প্রভাবশালীরা প্রভাব বিস্তার করতে পারে বলে ধারণা করছেন সচেতন মহল। তাই সিআইডি বা অন্যকোনো স্বতন্ত্র সংস্থাকে মামলাটি তদন্তে দায়িত্ব দেয়া হলে আসল চোরদের মুখোশ উন্মোচিত হতে পারে বলে মনে করেন তারা। তবে, উখিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, এটা স্পর্শকাতর একটি বিষয় যেহেতু- প্রভাবমুক্তভাবেই তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়া হবে। উল্লেখ্য, গত রোববার রাতে ৩ ঘণ্টা অভিযানের পর হলদিয়া পালংয়ের রুমকা চৌধুরীপাড়া থেকে ১১১ বস্তা সরকারি চাউল জব্দ করা হয়। এর ১ দিন পর র‌্যাব-১৫ নিয়ম মতে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেয়। চাল চোরদের বাঁচানোর চেষ্টা চলেছে বলে সবাই সমালোচনায় মুখর হয়ে উঠে। প্রধানমন্ত্রী অগ্রাধিকার প্রকল্পের চাল হওয়া বিষয়টি ‘টক অব দ্য ডিস্ট্রিকে’ পরিণত হয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত