অলংকারের ব্যবহার আমাদের সমাজে কম বেশি সবাই করে থাকেন। সেগুলো তৈরি করা হয় নানা প্রকার ধাতু দিয়ে। তবে কখনো কি মানুষের দাঁতের তৈরি অলংকারের কথা শুনেছেন? নিজের দাঁত নিয়েই এমন এক অদ্ভুত পরীক্ষা করে বসল অস্ট্রেলিয়ার তরুণী জ্যাকি উইলিয়াম। বুদ্ধিটা তার মাথায় আসে মুখে আক্কেল দাঁত গজানোর সময়। এই আক্কেল দাঁতই যেন অনেকখানি আক্কেল এনে দেয় উইলিয়ামের। মেলবোর্ন পলিটেকনিক নামের একটি প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন শিক্ষার্থী জ্যাকি উইলিয়াম। তার পড়ার বিষয় ছিল অলংকার ও বিভিন্ন বস্তুর ওপর নকশা করা। পড়াশোনা শেষে কাঙ্ক্ষিত ভালো কাজ না পেয়ে একটি সমাধিস্থলে মালি হিসেবে কাজ শুরু করেন। এর পরই দাঁত দিয়ে অলংকার তৈরির ভাবনা আসে তার মাথায়। হাতির দাঁতের তৈরি বোতাম, গয়নাসহ নানা সামগ্রীর জন্য একটা সময় প্রচুর হাতি মারা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এখনো মারছে চোরা শিকারিরা। প্রাণীদের জীবন বাঁচাতেই এই উদ্যোগ তার। প্রথমে নিজের আক্কেল দাঁত সংরক্ষণ করে রেখেছিলেন জ্যাকি। পরবর্তীতে এক দন্ত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। তার কাছ থেকেই অনেক দাঁত সংগ্রহ করেন জ্যাকি। এমনকি চিকিৎসকের সংগ্রহে তার সাবেক দুই শিক্ষকের দাঁতও খুঁজে পান তিনি। দাঁতের এই সামগ্রীগুলো তৈরি করতে প্রথমে খুব ভালো করে দাঁতগুলো পরিষ্কার করে নেন। এরপর সেগুলো যন্ত্রের সাহায্যে কেটে ছেঁটে একেবারে মুক্তোর মতো গোল আকৃতি দেন। এর পরই সেগুলো হয়ে যায় সুন্দর কিছু অলংকারের জুতসই উপাদান। এছাড়া মৃত মানুষের দাঁত, চুল বা শেষকৃত্যে মরদেহ পোড়ানোর পর হওয়া ছাই দিয়েও অলংকার তৈরি করেন জ্যাকি। দাঁত দিয়ে অলংকার তৈরির বিষয়ে তিনি বলেন, মানুষ যাতে তাদের ক্ষতি বা প্রিয়জন হারানোর শোকের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারেন, এ জন্য আমি এসব দিয়ে অলংকার তৈরি করি। কারণ, নিজের প্রিয় বা প্রিয়জনের শরীরের কিছু দিয়ে তৈরি অলংকার সঙ্গে থাকলে অনেকের দুঃখ লাঘব হতে পারে।