সাত আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা

আবেদনের শুনানি ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত মুলতুবি

প্রকাশ : ২০ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

আপিল বিভাগের দুই বিচারপতির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন ও মিছিল সমাবেশকে কেন্দ্র করে সাত আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা বিষয়ে আবেদনের শুনানি ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত মুলতুবি করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ বেঞ্চ গতকাল এ আদেশ দেন।

আদালত অবমাননা বিষয়ে আবেদনকারী অ্যাডভোকেট নাজমুল হুদার পক্ষে আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যুথি বিষয়টি নিয়ে গতকাল সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন। তিনি বলেন, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে সুপ্রিমকোর্ট প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়ে একটি অনুষ্ঠান করে। সেখানে বিচারপতিদের বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ২৩ আগস্ট এক সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলন থেকে বিচারতিগনকে পদত্যাগ করতে বলা হয়। অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি বলেন, বিচার অঙ্গনকে কলুষিত করা ও বিচার বিভাগকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পরিপ্রেক্ষিতে সাত আইনজীবীর বিরুদ্ধে আবেদনটি আনা হয়েছে। তিনি বলেন, দেশের স্বার্থে কোর্ট অঙ্গনকে সুষ্ঠু রাখা, বার ও বেঞ্চের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখা আইনজীবীদেরও দায়িত্ব। বিচারপতিদের নিয়ে বক্তব্য জনসাধারণের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়। বিচারালয়ে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় ও সমুন্নত রাখতে সাত আইনজীবীর বিষয়ে আবেদনটি আনা হয়।

অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি বলেন, আগামী ১৫ নভেম্বর পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ। এ সময় পর্যন্ত সুপ্রিমকোর্টসহ সব আদালত অঙ্গনে কোনো ধরনের মিছিল সমাবেশ না করার বিষয়ে হাইকোর্ট রায় কঠোরভাবে অনুসরণ করতেও বলা হয়েছে। ২০০৫ সালে বিচারপতি আব্দুল মতিন ও বিচারপতি এএফএম আব্দুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গনে আইনজীবীদের মিছিল সমাবেশ না করা সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়ে রায় দিয়েছিলেন। সেই রায় কঠোরভাবে আপিল বিভাগ আইনজীবীদের মেনে চলতে নির্দেশ দিয়েছেন বলে আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যুথি জানান।

‘শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ’ উল্লেখ করে দেয়া বক্তব্যকে ইস্যু করে আপিল বিভাগের দুই বিচারপতির পদত্যাগ দাবি করে সংবাদ সম্মেলন ও মিছিল সমাবেশ কর্মসূচি পালন করছিল বিএনপি সমর্থিত আইনজীবী সংগঠন। এসব কর্মসূচি আদালত অবমাননার সামিল উল্লেখ করে বিএনপিপন্থি সাত আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদনটি ২৯ আগস্ট দাখিল করা হয়। সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী নাজমুল হুদা এ আবেদন দায়ের করেন।

আদালত অবমাননার অভিযোগ ওঠা সাত আইনজীবী হলেন- জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ও বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি সাবেক এটর্নি জেনারেল এজে মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট ফাহিমা নাসরিন মুন্নি, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিমকোর্ট শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল জব্বার ভূঁইয়া, সুপ্রিমকোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল, সুপ্রিমকোর্ট বারের সাবেক সহ-সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিমকোর্ট শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল। গত ৩০ আগস্ট তৎকালীন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বিভাগ বেঞ্চ বিষয়টি নিয়ে গতকাল দিন ধার্য করে আদেশ দেয়।