ঢাকা ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক

অব্যবস্থাপনার সঙ্গে বাড়ছে বিড়ম্বনা

অব্যবস্থাপনার সঙ্গে বাড়ছে বিড়ম্বনা

পুরান ঢাকার সদরঘাট এলাকায় অবস্থিত বাহাদুর শাহ পার্ক। ব্যস্ততম ঢাকা শহরের মানুষের যেন একটুখানি স্বস্তির নিঃশ্বাস এই পার্ক ঘিরে। কিন্তু এই স্থানটি এখন মানুষের জন্য অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চারপাশে বিভিন্ন ধরনের অস্থায়ী খাবার দোকান, হকার ও রিকশার জট। এছাড়া সেখানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ ফুড ভ্যান স্থাপনের ইজারা দিয়েছে। ফলে সদরঘাটগামী বিভিন্ন পরিবহনের যাত্রী ওঠানামাসহ সব মিলিয়ে মানুষের বিশ্রামের জায়গাটি এখন হয়ে ওঠেছে বিড়ম্বনার জায়গা।

জানা যায়, এক সময়ের আন্টঘর নামে পরিচিত বাহাদুর শাহ পার্ক ১৮৫৮ সালে ভিক্টোরিয়া পার্ক নামে পরিচিত লাভ করে। পরে ১৯৫৭ সালে (মতান্তরে ১৯৬১) সালে সিপাহি বিদ্রোহের ১০০ বছর পূর্তিতে এই বিদ্রোহের বিপ্লবীদের আত্মত্যাগকে স্মরণীয় করে রাখতে এর নতুন নাম দেওয়া হয় বাহাদুর শাহ পার্ক।

বাহাদুর শাহ পার্কের আশপাশ ঘিরেই আছে একটি পাবলিক বিশ্বিবদ্যালয়সহ কয়েকটি কলেজ। এছাড়াও রয়েছে, সেন্ট গ্রেগরি উচ্চ বিদ্যালয় ও ঢাকা গভ. মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের মতো ঐতিহ্যবাহী ও বিখ্যাত মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের অধ্যয়নরত শতশত শিক্ষার্থীদের সমাগমস্থল ছাড়াও সদরঘাট থেকে ঢাকা ও ঢাকা থেকে সদরঘাটগামী যাত্রীদের চলাচলে মুখরিত থাকে বাহাদুর শাহ পার্ক এলাকা।

পার্ক এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, চারপাশে অস্থায়ীভাবে বসানো বিভিন্ন খাবারের দোকান। এছাড়া পার্কের দক্ষিণ পার্শ্বে একটি রেস্তোরাঁ রয়েছে। আর এসব খাবারের দোকানের উচ্ছিষ্ঠ যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে যার দুর্ঘন্ধে পথচারীদের চলাফেরা সমস্যা সৃষ্টি করছে। এছাড়াও বাহাদুর শাহ পার্কের পূর্বপাশে পাবলিক টয়লেট থাকলেও এর পাশেই পার্কের দেওয়াল ঘেঁষেই রয়েছে উন্মুক্ত শৌচাগার। যার দুর্ঘন্ধে এর পাশ দিয়ে চলাচল অসম্ভব হয়ে দেখা দিয়েছে। তার উপর আরো আছে অসংখ্য ছিনতাইকারী যারা ভিক্ষুকের বেশ ধরে ঘুরে বেড়ায়। আর সুযোগ পেলেই পথচারীদের সর্বস্বান্ত করে দেয়।

প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা বিভিন্ন বয়সি লোকজনের সরব উপস্থতি চোখে পড়ার মতো। একটু অবসর পেলেই চলে আসেন পার্কে, এমনই একজন শাহজাহান মোল্লা। সত্তোর্ধ এই প্রবীণ বলেন, একসময় এর অবকাঠামো এত বেশি উন্নত না থাকলে ও তখন এখানে একটা নিরিবিলি ও শান্তিময় পরিবেশ ছিল। কিন্তু এখন গাড়িঘোড়া বেড়েছে, ঢাকা শহরের মানুষ বেড়ে গেছে। এখন আগের সে পরিবেশ আর নেই। কবি নজরুল সরকারি কলেজর শিক্ষার্থী রবিউল আলম বলেন, প্রতিদিন ক্লাস শুরুর আগে পার্কে বসে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেই, কিন্তু চারপাশে হকারদের চিৎকার আর মোটর গাড়ির উচ্চ আওয়াজের হর্ন এখানে বসে থাকাই দায় হয়ে পড়ে। পথচারী ও স্থানীয়দের এত অভিযোগ সত্ত্বেও কোনো সমাধান না হওয়ায় অনেকে প্রশাসন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অবহেলাকে দুষছেন। সকাল বেলা পাতঃভ্রমণকারী কিশোর দাস বলেন, এখানে দিন দিন হকার ও ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য বেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু প্রশাসন কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তারা দেখেও না দেখার ভান করে আছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোতোয়ালি থানার এসআই হাসান মাতব্বর আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, আমর দায়িত্ব হলো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নজরদারি ও অপরাধ নির্মূলে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা। অস্থায়ী দোকানপাট ও পথচারীদের যাতায়াতের সমস্যা বিষয়গুলো দেখার দায়িত্ব ট্রাফিক পুলিশের।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত