চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের কক্সবাজার অংশে ১১৪টি বাঁক রয়েছে। এরই মধ্যে ৪০টি বাঁকের অবস্থা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এই ঝুঁকিপূর্ণ এই বাঁকগুলোতে দুর্ঘটনা এড়াতে ‘আয়না’ বসানোর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহে আরেফীন। গতকাল শনিবার বিকালে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যানবাহন চলাচলে বেশিরভাগ দুর্ঘটনা বাঁকের কারণে হয়। এ মহাসড়কের কক্সবাজার অংশে ১১৪টি বাঁক রয়েছে। এসব বাঁকে দুর্ঘটনা বেশি ঘটে থাকে। তাই আমরা ও ওখান থেকে ৪০টি বাঁককে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে, সেখানে আয়না বসানোর পরিকল্পনা করেছি। আয়নাগুলো বসালে বিপরীত দিক থেকে আসা যানবাহন অপর যানবাহনকে আয়নাতে দেখতে পাবে। ফলে সড়ক দুর্ঘটনা অনেকটা কমে আসবে। তিনি আরো বলেন, সড়কে চলাচলে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে (বাঁক) সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। এরই মধ্যে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকে ‘আয়না’ লাগানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সহসাই এই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। বিআরটিএ কক্সবাজার কার্যালয়ের সূত্র মতে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক- উপসড়কে ৬৪টি দুর্ঘটনায় ৬৬ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ১০৮ জন। হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিয়নের সূত্র মতে, সড়ক ও মহাসড়কে মারা গেছে ৫৬ জন। তারমধ্যে চিরিঙ্গা হাইয়ে থানা এলাকায় ২৮ জন, শাহপুরীতে ৬ জন, রামুক্রসিংয়ে ৭ জন, মালুমঘাটে ১২ জন ও হোয়াইক্যংয়ে ৩ জন মারা যান। কক্সবাজারের চিরিঙ্গা হাইওয়ে থানার ইনচার্জ খোকন কান্তি রুদ্র বলেন, ‘কক্সবাজার চট্টগ্রাম মহাসড়কের অধিকাংশ অংশে প্রশস্ততা কম এবং বাঁকও বেশি। সড়কের তুলনায় যানবাহনের সংখ্যাও বেশি। মূল সড়ক থেকে ফুটপাত নিচু হওয়ায় গাড়ি খাদে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গতকাল পর্যন্ত আমার দায়িত্বে থাকা চিরিঙ্গা হাইয়ে সড়কে দুর্ঘটনায় ২৮ জন নিহত, ২৬ জন আহত হয়েছে। এসব ঘটনায় ৩৪টি গাড়ি জব্দ করা হয়। ১৫টি মামলা এবং চারজনকে আটক করা হয়েছে। আমরা সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সচেতনতামূলক কার্যক্রম করে আসছি। পুলিশ কর্মকর্তা খোকন কান্তি রুদ্র আরো জানান, মহাসড়কের চকরিয়ার ২৯ কিলোমিটার এলাকায় ২৯টি বাঁক রয়েছে। এইসব বাঁক চরমভাবে ঝুঁকিপূর্ণ। বিআরটিএ কক্সবাজার সার্কেলের (মোটরযান পরিদর্শক) মো. মামুনুর রশীদ বলেন, আজ জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস। দিবসটি উপলক্ষ্যে মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে কক্সবাজার বিআরটিএ কার্যালয় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সড়ক নিরাপত্তাবিষয় সম্পর্কে সচেতন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সচেতনমূলক সেমিনার করা হয়।