শিক্ষকতার পাশাপাশি ড্রাগন চাষ করে সফল বরগুনার নিমতলী আজিজাবাদ চরমাইঠা স্কুলের কৃষি বিজ্ঞানের শিক্ষক হাসানুল হক উজ্জ্বল। তিনি শিক্ষকতার পাশাপাশি ভেবেছেন বাড়ির সামনের জমি কীভাবে ব্যবহার করা যায়। যেমন চিন্তা তেমন কাজ। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ২০ লাখ টাকা খরচ করে ২ একর জমিতে ১১২৫ পিলারে সাড়ে ৬ হাজার ড্রাগনের চারা রোপণ করেন। মাসে দুবার ড্রাগন ফল কাটা হয়। প্রতি কেজি ড্রাগন পাইকারি বিক্রি করেন ২৬০-৩০০ টাকায়। এখন পর্যন্ত তিনি সাড়ে ৭ লাখ টাকার ড্রাগন বিক্রি করেন। বর্তমানে প্রতিটা গাছে ড্রাগন ফল ধরেছে। পর্যায়ক্রমে ফলন আরো বৃদ্ধি পাবে বলেও আশা করছেন তিনি। গ্রামের লোকজন বলে ড্রাগন একটি লাভজনক চাষ। পতিত জমিতে ড্রাগন চাষ করে অতি দ্রুত সফলতা লাভ করা সম্ভব। স্থানীয় বাসিন্দা নাইম জানান, ড্রাগন চাষ করা জমিটি দেখতে খুব সুন্দর ও পরিপাটি। ড্রাগন লতানো কাঁটাযুক্ত গাছ, এর কোনো পাতা নেই। গাছ দেখতে অনেকটা সবুজ ক্যাকটাসের মতো। ড্রাগন গাছে শুধু রাতে সপরাগায়ন হয়ে ফুল ফোটে। ফুল লম্বাটে সাদা ও হলুদ রঙের হয়। প্রতিটি গাছেই ফল ধরেছে। এছাড়া ড্রাগন ফলের দামও বাজারে বেশি। এছাড়াও গরু ছাগলের খাওয়ার ভয় না থাকায় বসতবাড়ির পাশে পতিত জায়গায় ড্রাগন চাষ করা যায়। এজন্য ভেবেছি ড্রাগন চাষ করব। কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, ড্রাগন লাভজনক ফল। ড্রাগন চাষ করে দ্রুত সফল হওয়া সম্ভব। বরগুনা জেলায় প্রায় ১১ হেক্টর জমিতে ড্রাগনের চাষ করা হয়েছে। সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বরগুনায় প্রতিবছর ড্রাগন ফল চাষের পরিধি বাড়ছে। বাজারে ড্রাগন ফলের প্রচুর চাহিদা থাকায় আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন ফলের চাষ করে এরইমধ্যে বিপ্লব সৃষ্টি করেছে পিছিয়েপড়া নিম্ন আয়ের মানুষ। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে তাদের সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বরগুনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক বদরুল আলম বলেন, ড্রাগন একটি উচ্চমূল্যের ফসল। প্রতিনিয়তই ড্রাগন চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে আসছে এবং কৃষকদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। তিনি আরো বলেন, ড্রাগন ফলের ক্ষুদ্র কালো বীজ ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৯ ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ। এগুলো হার্টের জন্য খুবই ভালো কার্যকরী এবং কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজের ঝুঁকি কমায়। ড্রাগন ফল খাওয়া হার্টের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে উপকারী। এটি হার্ট ভালো রাখার পাশাপাশি, রক্তচাপ ও ওজন নিয়ন্ত্রণেও সহায়তা করে।