ভোরের আলোয় ব্যস্ততা বেড়ে যায় মণ্ডপগুলোয়

চট্টগ্রামে আনন্দ উৎসবমুখর পরিবেশে চলছে দুর্গাপূজা

প্রকাশ : ২২ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  চট্টগ্রাম ব্যুরো

চট্টগ্রামজুড়ে বর্ণাঢ্য আয়োজনে চলছে দুর্গাপূজা। গতকাল মহাসপ্তামীর দিনেও পূজামণ্ডপগুলোয ছিল উপচে পড়া ভিড়। ধূপের ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন পূজামণ্ডপে নবপত্রিকা স্নান শেষে সপ্তমী বিহিত পূজা করেছেন পুরোহিত সঙ্গে ছিলেন তন্ত্রধারক। গতকাল ভোরের আলো ছড়িয়ে পড়তেই মণ্ডপগুলোতে পূজার্থীদের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। দিনভর ছিল সেই ব্যস্তা। পূজার উপকরণ আর নৈবেদ্য সাজানো হয় প্রতিমার সামনে। ভোর ৬টা ৯ মিনিট থেকে শুরু করে ৯টা ৫৭ মিনিটের মধ্যে দেবীর নবপত্রিকা প্রবেশ, স্থাপন, সপ্তম্যাদি কল্পারম্ভ ও ষোড়শোপচারে মায়ের পূজা সম্পন্ন হয়। এরপর দেবী দুর্গার চরণে দেওয়া হয় পুষ্পাঞ্জলি। পুরোহিতরা জানান, সপ্তমীতে দেবী দুর্গার কালরাত্রি রূপের পূজা করা হয়। এর ফলে অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটিয়ে শুভ শক্তির কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেন দেবী দুর্গা। দুর্গাপূজার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে নবপত্রিকা পূজা। কলাগাছ, গুঁড়ি-কচুর গাছ, হলুদ গাছ, জয়ন্তীর ডাল, বেলের ডাল, দাড়িম গাছ, অশোকের ডাল, মানকচু ও ধানের চারা- এই ৯টি উদ্ভিদ আবশ্যক নবপত্রিকা রচনায়। বেলতলায় যেমন দেবী দুর্গার অধিবাস হয়, তেমনি নবপত্রিকারও অধিবাস হয়। এরপর এই উদ্ভিদগুলো হয়ে ওঠে দেবীর প্রতীক। কলাগাছ হন ব্রাহ্মণী। গুঁড়ি-কচু হন দেবী কালিকা। হরিদ্রা হন দেবী দুর্গা স্বয়ং। জয়ন্তীর অধিষ্ঠাত্রী দেবী কার্তিকী। বেলের অধিষ্ঠাত্রী শিবা। দাড়িম বা ডালিম গাছে রক্তদন্তিকার অধিষ্ঠান। অশোকের অধিষ্ঠাত্রী দেবী শোকরহিতা। মানকচু গাছের অধিষ্ঠাত্রী দেবী চামুন্ডা। আর ধানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী লক্ষী। গঙ্গার জলে স্নান করানো হয় নবপত্রিকাকে। এরপর বিধিমতে পূজা করে সেটি স্থাপন করা হয় দুর্গাপ্রতিমার ডান পাশে। এ সময় ঢাক-ঢোল, কাঁসা এবং শঙ্খের ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে পূজামণ্ডপগুলো। ফুল-বিল্বপত্র নিয়ে নগরের জেএমসেন হল, রাজাপুর লেইন, দেওয়ানজী পুকুর পাড়, সদরঘাট, পাথরঘাটা, আগ্রাবাদ, নন্দনকানন, চেরাগী পাহাড়, চট্টেশ্বরীসহ বিভিন্ন এলাকার পূজামণ্ডপগুলোতে অঞ্জলি দিতে ভিড় করেন পূজার্থীরা। নগরীর জেএমসেন হলসহ ১৬ থানায় ব্যক্তিগত-ঘট পূজাসহ ২৯৩টি পূজামণ্ডপে মাতৃ আরাধনা চলছে। এছাড়া চট্টগ্রাম জেলার ১৫ উপজেলায় ২ হাজার ১৭৫ মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা চলছে। চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য্য বলেন, নগরীর সকল পূজামণ্ডপ ডিজে মুক্ত ও প্রতিটি মণ্ডপ সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। এছাড়া পূজার আনুষ্ঠানিকতা রাত ১২টার মধ্যে শেষ করার জন্য আয়োজকদের প্রতি অনুরোধ করা হয়েছে। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক সুগ্রীব মজুমদার দোলন বলেন, দুর্গাপূজা বাঙালির পূজা। তাই চার দিন ছুটির দাবি জানাই। বর্তমানে একদিন ছুটি আছে। পূজামণ্ডপে প্রশাসনের নজরদারি রয়েছে।