সুসংবাদ প্রতিদিন
চারা গাছে ঝুলছে থোকা থোকা আম
প্রকাশ : ২৪ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আলোকিত ডেস্ক
এখন আমের মৌসুম না হলেও শেরপুরের একটি এগ্রো ফার্মে চারা গাছের ডালে ডালে ঝুলছে আম। শুধু তাই নয়, এ আম বেশ উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে বাজারে। এতে ওই এগ্রো ফার্মের মালিকপক্ষ থেকে আগামীতে শেরপুরে সর্বত্র এ আম গাছের চারা ছড়িয়ে দিয়ে অসময়ে আমের চাহিদা মেটাতে পরিকল্পনা করেছে। স্থানীয়রাও গাছে গাছে থোকা থোকা আম দেখে আর্শ্চয হয়ে তারাও এ গাছ রোপণে আগ্রহ হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে ওই ফার্মে ১ হাজার ২০০ আম গাছের মধ্যে প্রায় ৪০টি বারোমাসি আমের চারা গাছ রয়েছে। কলম থেকে রোপিত এ চারা গাছে ২ বছরের মাথায়ই আমের ফলন আসায় বেশ আশা জাগিয়েছে ওই ফার্মের মালিককে। সরেজমিনে বাগানটি ঘুরে দেখা গেছে, এখন বাংলা আশ্বিন মাস এবং ইংরেজি অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ। গাছে গাছে তাল পাকার হিরিক পড়লেও শেরপুরের একটি এগ্রো ফার্মের দেশি-বিদেশি মিশ্র ফল বাগানে প্রায় অর্ধশত আম গাছে ঝুলছে থোকা থোকা আম। গত কয়েক বছর আগে শেরপুর সদর উপজেলার চরমোচারিয়া ইউনিয়নের কেন্দুয়ারচর গ্রামে ঢাকায় চাকরিরত দুই বন্ধু প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান এবং সোহেল আহমেদ প্রায় ৫ একর জমিতে গড়ে তুলেন ‘তালুকদার এগ্রো’ নামে একটি দেশি-বিদেশি মিশ্র ফল বাগান। এখানে বিভিন্ন ফল গাছের মধ্যে উল্লেখযোগ্য মৌসুমি এবং বারোমাসি প্রায় ৪৬ জাতের আমের চারা রয়েছে। যদিও চারাগুলো ২ বছর আগে রোপণ করা হয়। তারপরও দের বছরের মাথায়ই মৌসুমি আম উৎপাদন হয় প্রায় এক টন। আর এখন প্রায় ৪০টি গাছে রয়েছে বারোমাসি আম। এর মধ্যে থাই কটিমন এবং বারি-৪ জাতের আম গাছ রয়েছে বেশি। এর পাশাপাশি মৌসুমি আমের মধ্যে বারি-১১, আম্রপলি, ফজলি, ল্যাংরা, হিম সাগরসহ প্রায় ৪৬ জাতের আম গাছ রয়েছে। বারোমাসি আম খেতে সিজনাল আমের চেয়েও বেশ সুস্বাদু এবং এর চামড়া একটু পুরু হওয়ায় এ পাকা আম প্রায় ১৫ থেকে ২০ দিন পর্যন্ত স্বাভাবিকভাবেই রেখে খাওয়া যায়। এ বাগানে কর্মরত শ্রমিকরাও গাছো গাছে থোকা থোকা আম দেখে বেশ খুশি। তারা এ গাছের বেশ যত্ন নিয়ে থাকে। অসময়ে এ আমের ফলন দেখে আশপাশের মানুষের মাঝে বেশ কৌতূহল তৈরি হয়েছে। তারা এ বাগান দেখতে এবং খেয়ে বেশ তৃপ্ত হচ্ছে এবং তারাও এ আমের চারা রোপণ করে বাগান করতে আগ্রহ হয়েছে। এ বাগানের পরিচর্যার পাশাপাশি রোগবালাই দূর করতে স্থানীয় একজন কৃষিবিদকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তালুকদার এগ্রোর পরিচালক সোহেল আহমেদ জানায়, আমরা বেশ খুশি বারোমাসি আমের ফলন দেখে। তাই আমরা ভাবছি এলাকায় এ বারোমাসি আমের আবাদ ছড়িয়ে দিয়ে ভবিষ্যতে স্থানীয়ভাবে অসময়ের আমের চাহিদা মেটাব। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা হিরা জানান, এ তালুকদার এগ্রো ফার্ম থেকে এলাকায় বারোমাসি আমের ফলন ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য এ বাগানের গাছগুলো মাতৃ গাছ হিসেবে ব্যবহার করা হবে। এ গাছ থেকে গ্রাফটিংয়ের মাধ্যমে চারা উৎপাদন করে এলাকায় এ জাতের আম সম্প্রসারণ করা হবে। এ বিষয়ে জেলা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক ড. সুকল্প দাস জানায়, শেরপুর অঞ্চলে অসময়ের ফল বাগান নিয়ে বেশ আশাবাদী আমরা। এরই মধ্যে সদর উপজেলার একটি মিশ্র ফল বাগানে এ বারোমাসি আম উৎপাদন করে বেশ সাফল্য অর্জন করেছেন। আমরাও থাই কাটিমন এবং বারি-৪ জাতের আমের উৎপাদন বাড়াতে চাষিদের উৎসাহ দিয়ে যাব। যাতে আগামীতে জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে অসময়ে আম চাষ করে পুষ্টি চাহিদা মেটাতে পারে। এদিকে জেলায় আমচাষি ও সাধারণ মানুষ অসময়ের আম চাষ করে যেমন কৃষকরা লাভবান হবে এবং পুষ্টি চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে বলে মনে করছে সচেতন মহল ও কৃষিবিদরা।